লামার আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ চাউল বিতরণে কম দেওয়ার ছবি ও ভিডিও তোলায় সাঙ্গু পত্রিকার সাংবাদিক বেলাল আহম্মদের উপর চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলা হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় চেয়ারম্যানের পালিত ক্যাডাররা বেলাল আহম্মদের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ও পত্রিকার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাটি ঘটেছে আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভিজিএফের চাউল বিতরণের সময় শনিবার বেলা প্রায় ১১টায়।
সূত্রে জানাগেছে, শনিবার বেলা ১০টা থেকে আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১২শত মানুষকে ভিজিএফের চাউল বিতরণ শুরু হয়। সরকারী নিয়মে প্রতিজনকে ১০কেজি করে চাউল দেওয়ার কথা। কিন্তু চাউল বিতরণস্থল থেকে মেপে না দিয়ে বালতি করে ১০কেজি অনুমান করে ভিজিএফের চাউল বিতরণ শুরু করে। যারা চাউল নিয়েছে তারা বাইরে গিয়ে নিজেরা মেপে দেখে চাউল কম দিচ্ছে।
উপকার ভোগীরা জানান, আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বালতি করে আমাদের ১০কেজি সমপরিমান চাউল দিয়েছে। চাউল পরিমানে কম দেখে আমরা উক্ত চাউল বাইরে অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের একটু দূরে অবস্থিত জহির আহম্মদের দোকানে নিয়ে গিয়ে মেপে দেখি কোনটাতে ১০কেজি চাউল নেই। আছে কোনটাতে ৮কেজি, আবার কোনটাতে ৭কেজি ৯শত গ্রাম চাউল। তারা সাংবাদিকের জানালে সাংবাদিকরা ঘটস্থলে গিয়ে ভিজিএফের চাউল কম দেওয়ার ঘটনাটির ছবি ও ভিডিও করে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এগিয়ে এসে বেলাল আহম্মদকে ছবি ও ভিডিও তোলার ঘটনায় কুয়ারি করে অশালিন ভাষা ব্যবহার করতে থাকে। পরে চেয়ারম্যানের পালিত ক্যাডারদের জসিম চেয়ারম্যান নির্দেশ দেয় বেলালকে হামলা করতে। এর পর পরই সাংবাদিক বেলালের উপর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে হামলা শুরু করে ২০ থেকে ৩০ জন হামলা কারী। আত্মরক্ষার জন্য বেলাল আহমদ দৌড়ে পার্শ্ববর্তী জহির আহম্মদের দোকানে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা জাহির আহম্মদের দোকানে ঢুকে বেলাললকে মারধর করে বেলালের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ও পত্রিকার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর ঘটনাস্থলে আজিজ নগর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোহাম্মদ আলী এসে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের সহাতায় তার ক্যাডারদের কাছ থেকে একটি মোবাইল উদ্ধার করে। আরেকট মোবাইল পরে উদ্ধার করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
হামলার শিকার সাংবাদিক বেলাল আহম্মদ জানান, ভিজিএফ এর চাউল বিতরণে ১০কেজির পরিবর্তে কম দিচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যাই। পরে ঘটনার সচিত্র ছবি ও ভিডিও তুলতে থাকি। এ ঘটনা জানার পর তেড়ে এসে কেন ভিডিও করছো এ বলে কুয়ারী করতে থাকে চেয়ারম্যান। পরে আমার মোবাইল কেড়ে নিতে চেষ্টা করে। পরে তার পালিত ক্যাডারদের নির্দেশ দেয় আমাকে মারধর করতে ও মোবাইল কেড়ে নিতে। এর পর ২০ থেকে ৩০জন ক্যাডার আমার উপর হামলা চালায়। আমি আত্ম রক্ষার জন্য দৌড়ে জহিরের দোকানে আশ্রয় নিই। হামলাকারীরা দোকানে ঢুকে আমাকে মারধর করে আমার দুইটি মোবাইল ও সাঙ্গু পত্রিকার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যারা আমার উপর হামলা করেছে আমি নিন্মের মিন্টু দাশ(৪৫) পিকা মৃত রঞ্জিত দাশ,সাং চেয়ারম্যান পাড়া, ৩নং ওয়ার্ড, আজিজনগর, মোঃ রাশেদ( ৩২),পিতা ঃ সিরাজুল ইসলাম, সাং উত্তর পাড়া, ১নং ওয়ার্ড, আজিজনগর, মোঃ জসিম উদ্দিন,(৩৫) পিতাঃ আব্দুস সালাম, সাং তেলুনিয়া পাড়া, ৪নং ওয়ার্ড, আজিজনগর, মোঃ ইমরান (২৭) পিতাঃ নুর আহমদ, সাং ইসলামপুর ৪ নং ওয়ার্ড, আজিজনগর, মোঃ ওমর হাসান হিমেল(৩২) পিতাঃ জসিম উদ্দিন, সাং চেয়ারম্যান পাড়া, ৩নং ওয়ার্ড, আজিজনগর, মোঃ শাহিন(৩৩),পিতাঃ মৃত কানু মিয়া, সাং চেয়ারম্যান পাড়া, কোরবানিয়াঘোনা, ৯ নং ওয়ার্ড, হারবাং, চকরিয়া, কক্সবাজার চিনতে পরেছি। আছাড়া আরো অনেকজন এ ঘটনায় জড়িত রয়েছি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক এস.কে খগেশপ্রতি চন্দ্র খোকন বলেন, ঘটনার শুরুতে ঘটনাস্থলে আমি ছিলামনা। আমি বাজারে একটি দোকানে চা খাচ্ছিলাম। পরে জানতে পারি বেলালের উপর হামলা হচ্ছে। আমি দ্রুত গিয়ে দেখি ২০-৩০ জন হামলাকারীরা বেলালকে দৌড়াইয়া দক্ষিণ দিকে নিয়ে আসছে। এ সময় তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। এর পর বেলাল আত্মরক্ষার জন্য জহিরের দোকানে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা দোকানে ঢুকে বেলালকে দোকানদারের সম্মুখে মারধর করে তাঁর ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ও তাঁর পত্রিকার আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় আজিজ নগর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোহাম্মদ আলী বলেন, চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ও সাংবাদিক বেলাল আহম্মদ এর ঘটনার পর আমি ঘটনাস্থল গিয়েছি। পরে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের মধ্যস্থতায় তাঁর লোকদের কাছ থেকে বেলাল আহম্মদের একটি মোবাইল উদ্ধার করে দিয়েছি। বাকিটা উদ্ধারে চেষ্টা করছি।