রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকের বাঘাইহাট বাজরে আঞ্চলিক দুটি সংগঠনের গোলাগুলির ঘটনায় শান্তি পরিবহনের সুপারভাইজার মো. নাঈম হোসেন(২৮) নিহত হওযার প্রতিবাদে লক্ষ্মীছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সামাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ জুন বুধবার বিকেলে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
১৮ জুন মঙ্গলবার দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকের বাঘাইহাট বাজরে উপজাতীয় সন্ত্রাসী দু’পক্ষের গোলাগুলিতে নাঈম গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয় আরো ২জন। আহতদের মধ্যে দুলেই চাকমা ও চিক্কো চাকমা নামে দু’জনের নাম পাওয়া গেছে। নাঈম এর নিজ বাড়ি লক্ষ্মীছড়ির জুর্গাছড়ি এলাকায়। নাঈম জন্মের আগেই তার পিতার মো. নজরুল ইসলাম নিখোঁজ হন। ৪ বোন ১ ভাইয়ের মধ্যে নাঈম সবার ছোট। নাঈমের অন্তসত্তা স্ত্রী রয়েছে। বুধবার খাগড়াছড়িতে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ লক্ষ্মীছড়িতে পৌছলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্বজন ও প্রতিবেশিরা। স্বজনদের আহজারিতে আকাশ ভাড়ি হয়ে ওঠে।
এদিকে পূর্বেঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি থাকলেও রুপ নেয় বিক্ষোভ সমাবেশে। পড়ে বিশাল এক প্রতিবাদ মিছিল উপজেলা সদর, বেলতলী পাড়া, হাসপাতাল ও বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে হাইস্কুল প্রাঙ্গনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মো: বিল্লাল হোসেন বেপারি, মো: নাহিয়ান আখন্দ, কুরবান হোসেন আনোয়ার হোসেন মাওলা ও মো: আনিসুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে নাঈম হত্যার বিচার দাবি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। সকলের পক্ষ হতে মো: বিল্লাল হোসেন বেপারি আগামীকাল বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পারে একই স্থানে যুবকদের পক্ষ হতে সকাল-সন্ধা হরতাল পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ চলাকালে জনতার উপস্থিতিতে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় যান চলাচল অনেকটা বন্ধ হয়ে পড়ে। পড়ে হাইস্কুল মাঠে শত শত মুসল্লিদের অংশগ্রহণে নাঈমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীযরা জানায়, বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার বাঘাইহাট এলাকায় দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটলে বাঘাইহাট বাজরের শান্তি পরিবহণের সুপার ভাইজার মো. নাঈম গুলি বিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ইউপিডিএফ মূল দলের নেতৃত্বে প্রায় ৫ শতাধিক গ্রামবাসী বাঘাইহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের অবস্থানের দিকে আগাতে থাকে পরে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নিজেদের আত্মরক্ষায় বাঘাইহাট স্কুলের তৃতীয় তলায় অবস্থান নিলে গ্রামবাসীরা স্কুলের গেইট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা চালায়। পরে আঞ্চলিক দুটি দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মাঝে গুলি বিমিয়ের ঘটনা ঘটলে গ্রামবাসীরা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।