আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জায়গা জবর দখল নিতে জোর পূর্বক মাটির ঘর নির্মাণ করছে প্রতিপক্ষ

বেলাল আহমদ, লামা : | প্রকাশের সময় : বুধবার ৫ জুন ২০২৪ ০৯:২৪:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

বান্দরবানের লামা উপজেলায় আবদুল খালেক নামের এক বৃদ্ধের বহু কষ্টার্জিত সৃজিত বাগান থেকে জোর পূর্বক ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  শুধু  তাই নয়, গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার পর এখন জায়গা জবর দখলে নিতে জোরপূর্বক একটি মাটির ও  একটি  টিনের  ঘর  নির্মাণ করেন প্রতিপক্ষ। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি গিলাতলী গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃদ্ধ আবদুল খালেকের ছেলে এরশাদ মিয়া বাদী হয়ে মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, তাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ  আনোয়ার  হোসেন, জিয়াবুল হোসেন ও বেলাল হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী মামলা করেন। এ প্রেক্ষিতে আদালত থেকে জিআরও আনোয়ারুল ইসলাম উভয় পক্ষকে বিরোধপূর্ণ জাযগায় কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণে নিষেধ করেন। কিন্তু বিবাদীরা নিষেধা উপেক্ষা করে পুণরায় জায়গার উপর মাটির  ঘর  নির্মাণ কাজ করেন। বিবাদীদের হাত  থেকে জমি ও বাগানের গাছ রক্ষায় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগী আবদুল খালেক ও ছেলে এরশাদ মিয়া। 

অভিযোগে জানা যায়, ২৮৬নং ফাঁসিয়াখালী মৌজায় বৃদ্ধ আবদুল খালেকের নামে  ৫১৬নং হোল্ডিং এর দাগ নং ৩১৭৬, ৩১৭৭, ৩১৭৮, ৩১৭৯ ও ৩১৮০ এর  আন্দরে দুই একর  প্রথম  শ্রেণীর জমি আছে, এছাড়া আবদুল খালেকের ছেলে এরশাদ মিয়ার নামে একই  মৌজার আর/৭৪৮নং হোল্ডিং মূলে চার এক দ্বিতীয় শ্রেণীর ও সিট নং ১১, দাগ নং ৩১৭১ নং মূলে আরও এক  একর প্রথম  শ্রেণীর জমি ও দুই  একর  তৃতীয় শ্রেণীর জমি রয়েছে। ১৯৮০ সাল থেকে এসব  হোল্ডিং ও দাগের  জায়গায় বহু কায়িক  পরিশ্রম ও  অর্থ ব্যয়ে আবাদ করত: বসতঘর  নির্মাণসহ ফলজ বনজ বাগান সৃজন করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভোগ করে আসছেন। এ জমি ছাড়া তাদের আর কোন জমি নেই। ২০২৩ সালের ৬ জুন উল্লেখিত বিবাদীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আবদুল খালেক ও তার ছেলে এরশাদ মিয়ার সৃজিত বাগান থেকে জোর পূর্বক ১৪ বছর বয়সী ২ হাজার একাশিয়া গাছ ও ১৪ বছর বয়সী ১ হাজার ম্যালেরিয়া গাছ কেটে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ৩০ লক্ষ টাকা। গাছ কাটার সময় বিবাদীদের বাধা প্রদান করলে এরশাদ মিয়া ও তার বাবা আবদুল খালেককে গালিগালাজ ও মারধরের চেষ্টা করেন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে জানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শণও করেন মোহাম্মদ তাজুল ইসলামগং। পরে এ ঘটনায় বৃদ্ধ আবদুল খালেকের ছেলে এরশাদ মিয়া প্রতিকার  চেয়ে মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, তাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ  আনোয়ার  হোসেন, জিয়াবুল হোসেন ও বেলাল হোসেন সহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করলে জামিনে মুক্তিপায় বিবাদীরা। জামিনে মুক্তির পর আদালতের জিআরও আনোয়ারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়  পক্ষকে  বিরোধীয় জায়গায় কাজ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু  নিষেধা  উপেক্ষা করে বিবাদী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামরা এরশাদ মিয়া ও আবদুল খালেকের জায়গার উপর একটি মাটির ঘর  ও একটি টিনের ঘর স্থাপনের কাজ করেন।  

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা কারো জায়গায় যায়নি, আমরা আমাদের জায়গায় উপর আছি। এক প্রশ্নের জবাবে  নিষেধাজ্ঞার পরও বিরোধীয় জায়গার উপর স্থাপনার কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করে ফেলেন মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। 

গিলাতলী সমাজের সাবেক সর্দার আবদুর মন্নান জানান, আবদুল খালেক ও এরশাদ মিয়াদের জায়গা নিয়ে বিরোধ দেখা  দিলে উভয় পক্ষের  সম্মতিক্রমে সামাজিকভাবে জায়গা পরিমাপ পরিচিহ্নিত করে পিলার স্থাপন করে  দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এত বছর পর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামরা আবদুল খালেক ও এরশাদ মিয়ার সাথে অযথা জবর দখলের চেষ্টা করছেন।

লামা কোর্টের জিআরও আনোয়ারুল  ইসলাম  সাংবাদিকদের জানায়, এরশাদ  মিয়ার মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের  নির্দেশক্রমে শান্তি  শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিরোধীয় জায়গায় কোন  ধরণের স্থাপনা  বা কাজ না করার  জন্য নিষেধ  করেছি। কোন  পক্ষ  যদি নিষেধ অমান্য করলে আইনগত  ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।