বিভিন্ন ব্যাক্তি ও এনজিও এর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ভারতে পালিয়ে ত্রিপুরার সাব্রুম পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন খাগড়াছড়ির রামগড়ের ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিবার। এরা হচ্ছেন খোকন দে (৪৮), স্ত্রী শিউলী দে (৪০), মেয়ে পুজা দে (২০), পুনির্মা দে (১২) ও পুজার এক বছরের শিশু পুত্র সৃজয় দে। এরা রামগড় পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সন্দ্বীপটিলার বাসিন্দা। এছাড়া সাব্রুমের মুহুরিপুরের বাসিন্দা খোকনের শ্বশুর শম্ভু পাল (৬০), শ্বাশুড়ি নন্দিতা পাল (৫২) ও শ্যালিকা অর্পিতা বৈদ্য (১৭) কেও গ্রেফতার করে সাব্রুম পুলিশ। রামগড়ের লাচারিপাড়ার বিপরীতে সাব্রুমের বৈষ্ণবপুরের জলকুম্বা নামক স্থান থেকে ভারতীয় পুলিশ সোমবার সন্ধ্যায় তাদের আটক করে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ও সীমান্তের ওপারের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আটককৃতদের সাব্রুম মহকুমা আদালতে সোর্পদ করার পর আদালত তাদেরকে বিলোনিয়া কারাগারে পাঠিয়ে দেন। সন্দ্বীপটিলার গ্রামবাসিরা জানায়, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে খোকন দে ও তার স্ত্রী শিউলী বিভিন্ন এনজিও হতে ৪-৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেয়। মোটা অংকের টাকায় নিজ বাড়িটিও বন্ধক দেন এবং জগন্নাথপাড়ায় খোকনের চা দোকানের ফ্রিজসহ সমস্ত মালামাল বিক্রি করে দেন। গ্রামবাসিরা আরও জানায়, খোকন ও শিউলী তাদের মেয়ে পুজাকে এক বছরের শিশুসহ তার স্বামীর বাড়ি থেকে এনে তাকেও সঙ্গে করে ভারতে নিয়ে যায়। এদিকে, স্বামীকে না জানিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে শিশুসহ স্ত্রী ভারতে পালানোর খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পুজার স্বামী সুমন রঞ্জন। তিনি জানান, দুর্গাপূজার ১-২দিন আগে বেড়ানোর কথা বলে একমাত্র শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়ি যায় পুজা। নগদ দুই লক্ষ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকারও নিয়ে যায় সে। দুর্গা পুজার পর তালবাহানা করে সে আর বাড়িতে ফিরে নাই। সুমন আরও জানায়, গত ২-৩ মাস আগে ভারতের সাব্রুম থেকে নানাশ্বশুরসহ তিনজন আত্মীয় রামগড়ে বেড়াতে আসেন। সোমবার সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তারা ভারতে পালিয়ে যান।
স্ত্রী-পুত্রসহ ভারতে পালানোর খবর পেয়ে তিনি চট্টগ্রামের কর্মস্থল থেকে রামগড়ে ছুটে আসেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করেছেন। সুমন জানান, তার শ্বশুর-শাশুড়ি বিভিন্ন এনজিও হতে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন। গোপনে বাড়ি বন্ধক রেখে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন। পুত্রকে নিয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন সুমন। সন্তানকে ফিরে পেতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন। এদিকে, ভারতে রামগড়ের হিন্দু পরিবারটির আটকের তথ্য অবগত নন বলে জানান রামগড়স্থ ৪৩ বিজিবি।