বান্দরবানের আলীকদমে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ও হেনস্থার অভিযোগে থানায় মামলা রুজু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই )দিবাগত রাতে আলীকদম থানায় উপস্থিত হয়ে আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ১ ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন ও হেনস্তার অভিযোগে করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আলীকদম থানায় মামলা রুজু হয় বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৯ মে স্কুলে যাওয়ার পর সকাল অনুমানিক ৯ টার দিকে প্রথান শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ডেকে স্কুলের পাশে তার থাকার ঘরে নিয়ে যায়। পরে রুম পরিষ্কার করতে বলেন। তার বসবাসের রুম পরিষ্কার করতে যাই। রুম পরিষ্কার করা শেষে প্রধান শিক্ষক আমাকে খাবারের থালা-বাটি ধুয়ে দিতে বলে। খাবারের ডেকচি ও বড় বাটি পরিষ্কার করার একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিছনে এসে আমাকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে এবং আমায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে স্পর্শ করতে থাকে। বাঁধা দিলে তিনি বিয়ে করবেন মর্মে বারবার বলতে থাকে।
এ ঘটনার পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় খারাপ ইশারায় ও ইঙ্গিতে তার রুমের মধ্যে ডাকলে আমি কোন রকম সাড়া না দিলে তিনি আমাকে লাল টিসি দিয়ে স্কুল হতে বের করে দিবে মর্মে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে।
পরে ঘটে যাওয়া বিষয়টি জানাজানি হবে বুঝতে পেরে সু-কৌশলে আমাকে গত ৮ জুন স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে স্কুল হতে বের করে দেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়ার কারণে পিতা মাতা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়টি খুলে বলেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা-মাতা বিষয়টি আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করেন।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তিনি আরও বলেন,আমি নিজেই প্রধান শিক্ষকের হাতে যৌন হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হয়েছি। জানি না কত মেয়ের সাথে এমন জঘন্য কাজ করেছে এই লম্পট শিক্ষক। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
এই দিকে,গত (৪ জুন) যৌন হয়রানির ও হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনের চেষ্টা করলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের আশ্বাসে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চলমান সকল সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানালে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন স্থগিত করেন। বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি,অশালীন মন্তব্যের বিষয়টি সবার সামনে নিয়ে আসায় ও প্রতিবাদ করায় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দেন এই প্রধান শিক্ষক।
আলীকদম থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) খন্দকার তবিদুর রহমান বলেন,ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু হয়েছে এবং প্রধান শিক্ষককে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।