
বান্দরবানের লামা উপজেলার ৫টি রাবার বাগান থেকে ২৬ রাবার শ্রমিককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।শনিবার ভোরে লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি মুরুংঝিরি এলাকা থেকে তাদেরকে অপহরণ করা হয়। ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে পেরিয়ে গেলেও এখনও তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রাবার বাগান হতে পাহাড়ি সন্ত্রাসী কর্তৃক অস্ত্রের মুখে জিম্মি ২৬ জন শ্রমিক থেকে মোঃ জিয়াউর রহমান (৪৫) নামে একজন পালিয়ে এসেছে।সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে শ্রমিক মোঃ জিয়াউর রহমান পালিয়ে এসে বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানাযায়, একটি সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ সম্প্রতি লামার দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার ফোরকান ও শাহজাহান, নুরু মোহাম্মদ কোম্পানি, আহসান উল্লাহ কোম্পানি, হুমায়ুন কোম্পানি ও সোনামিয়া কোম্পানি মালিকানাধীন পৃথক পাঁচটি রাবার বাগান থেকে ২৬ জন রাবার শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ।
অপহৃতরা হলেন মো. ফারুক (২৬), মো. আইয়ুব আলী (২৬), মো. সিদ্দিক (৪০), মো. আব্দুল খালেক (২০), আব্দুল মাজেদ (১৭), মনিরুল ইসলাম (৩০), জিয়াউর রহমান (৪৫), মো. মোবারক (২৫), মো. হারুল (৩০), সৈয়দ নুর (২৮), রমিজ উদ্দিন (৩০), মো. কায়ছার (৩৮), মো. মনির হোসেন (৩৫), মো. ইমরান (১৭), মঞ্জুর (৩০), আফসার আলী (২৫), মো. খাইরুল আমিন (৩০), আবু বক্কর (২৯), আবদুর রাজ্জাক (৩৩) ও মো. মবিন (২৫)। অপর ছয়জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।অপহৃতরা সবাই কক্সবাজার জেলার রামু ও টেকনাফ এবং বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। তারা ওই সব রাবার বাগানে ট্রেপার (রাবার কস সংগ্রহকারী) হিসেবে কাজ করতেন।
রাবার বাগান মালিক মো. শাহজাহান জানান, সন্ত্রাসীরা তার বাগানের ট্রেপারদের কাছে ইতিপূর্বে ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। চাঁদা না পেয়ে তার বাগানের ১২ ট্রেপারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের জন্য ছয় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।
সন্ত্রাসীরা অপহৃত অন্যদের কাছ থেকেও পৃথক মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য ২ ফেব্রুয়ারি গজালিয়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার কমলা বাগান থেকে ছয় কাঠ শ্রমিক এবং ১৪ জানুয়ারি দুর্গম বমু খাল এলাকার তিনটি খামারবাড়ি থেকে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা সাতজন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় এসব অপহৃতদের কেউ কেউ যৌথবাহিনীর অভিযান এবং অনেকে মুক্তিপণ দিয়ে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে মুক্তি পায়।
লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান,শ্রমিক অপহরণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। ঘটনাস্থল দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় অপহরণের সুযোগ পাচ্ছেন সন্ত্রাসীরা। এখনও অপহৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে শ্রমিক মোঃ জিয়াউর রহমান পালিয়ে এসে বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেন।যৌথ বাহিনীর উদ্ধার অভিযান চলছে ।