আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হালদা নদীতে কঠোর নজরদারিতেও বেপরোয়া মা মাছ শিকারিরা

সাঙ্গু ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২২ এপ্রিল ২০২২ ০৪:২৭:০০ পূর্বাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর পাড়ের ছয় কিলোমিটার এলাকায় বেসরকারি সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) উদ্যোগে বসানো হয়েছে ৯টি সিসি ক্যামেরা। ক্যামেরাগুলো নিয়ন্ত্রণে আছে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলায় পাহারা দেন ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক। নিয়মিত টহলে থাকেন নৌ পুলিশের একটি টিম। অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। অভিযান পরিচালনায় আছে স্পিডবোট। এত আয়োজন এবং কঠোর নজরদারির পরও থামানো যাচ্ছে না অসাধু মা মাছ শিকারিদের। প্রতিদিনই বসাচ্ছে জাল, উদ্ধারও করা হচ্ছে। মা মাছ নিধনে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে অসাধু শিকারিরা। জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে হালদা নদীতে কার্যক্রম শুরু করে নৌ পুলিশ। এ জন্য হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শা রামদাশ মুন্সির হাটে বসানো হয়েছে অস্থায়ী নৌ পুলিশ ক্যাম্প।

 

হালদা নদীতে অবৈধ মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই পরিচালিত হচ্ছে অভিযান। ১৯ এপ্রিল হালদা নদীর মোহনা থেকে ৮ হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়, ১৮ এপ্রিল জব্দ করা হয় ১২ হাজার মিটার, ১৭ এপ্রিল করা হয় প্রায় ১২ হাজার মিটার ও ১৬ এপ্রিল জব্দ করা হয় ১২ হাজার মিটার দৈর্ঘ্যরে ২১টি ঘেরাজাল। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৭২ লাখ ২৯ হাজার টাকা মূল্যের ১ লাখ ৭৩ হাজার ৪২০ মিটার জাল জব্দ করে নৌ পুলিশ। 

 

চট্টগ্রাম অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনূল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সামনে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুম। এখন মা মাছের আনাগোনা দেখা দিচ্ছে। কিন্তু এখন যদি জাল বসানো হয় তাহলে মা মাছ আটকে যাবে। ফলে ডিম কমে যাবে। তাই আমরা প্রতিদিনই নদীতে অভিযান পরিচালনা করছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, সামনে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুম। এমন সময়ও মা মাছ শিকারিদের ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতিদিনই নদী থেকে জাল উদ্ধার করা হচ্ছে। এটি মা মাছের জন্য বড় হুমকি। হালদার দুই পাড়ের মানুষের সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, হালদা নদীর মা মাছ রক্ষায় নিয়মিত পাহারা দেওয়া এবং অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তবুও প্রতিদিনই জাল জব্দ করা হচ্ছে। এটি দুঃখের বিষয়। এভাবে অভিযান চালিয়ে কি হালদা নদীকে রক্ষা করা সম্ভব? যদি প্রতিনিয়তই জাল বসানো হয়, তাহলে মা মাছের জন্য হুমকি হবে।