মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষে হেলিকপ্টারসহ স্থল ও নৌপথেও মুখামুখি অবস্থানে রয়েছেন সরকার ও বিদ্রোহীরা। যেখানে মিয়ানমার
অংশে সরকারী বাহিনীর সীমান্ত চৌকি রয়েছে ২ টি মাত্র। যে দু'টি পয়েন্টের ১ টি হলো তুমব্রু রাইট ক্যাম্প। বাংলাদেশ অংশের তুমব্রু গ্রামের ওপারে এ ক্যাম্পের অবস্থান । গত ২৯ জানুয়ারি থেকে এ ক্যাম্পটি আয়ত্বে নিতে রাইট ক্যাম্পে থাকা সেনাদের লক্ষ্য করে
মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে আরকান আর্মি । জবাবে মিয়ানমার সেনারাও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়,ঘুমধুম ও সোনাইছড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ছোট ছোট দল হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে। যাদের অনেকেই নানা কৌশলে বাংলাদেশী স্বজনদের সহায়তায় চাচ্ছেন ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, কয়েক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করার খবর তার কাছে রয়েছে।
যাদের মধ্যে মুসলিম উপজাতি,বড়ুয়া ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে।
তিনি আরো বলেন এদের মধ্য থেকে অনেককে তিনি চেনেন।
এদিকে বিজিবি সদস্যরা দিনরাত সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছে সীমান্ত সুরক্ষা এবং অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ,চোরাচালান প্রতিরোধে ,মিয়ানমার থেকে এই পযর্ন্ত বহু অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকিয়েছেন সফলতার সাথে। তন্মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার ঘুমধুম বাইশফাড়ী বিওপির বিশেষ টহল দল অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে মিয়ানমারের উপজাতি নাগরিক এক নারীসহ ২ সন্তান কে আটকের ২ ঘন্টা পর পুশব্যাক করে দেন তারা।
এছাড়াও ৩০ জানুয়ারি ঘুমধুম রেজুআমতলী সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় মংপ্রুশি মারমা (২০) নামে এক মিয়ানমারের নাগরিককে আটকের কয়েক ঘন্টার মধ্যে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায়েছেন।
বিজিবির অধীনস্থ সীমান্ত ৩৭ নাম্বার পিলার এলাকা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মগপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করে বিজিবি। আটক মিয়ানমার নাগরিক হলো উখসওনো চাকমা স্বামী অংখিও চাকমা সে মায়ানমারের মংডু জেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়।
এদিকে সীমান্ত পরিস্থিতি এখনও নাজুক।
১ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিয়ানমারের কয়েকটি হেলিকপ্টার মিয়ামার সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় মহড়া দিয়েছে বলে স্থানীয় কয়েকজন ব্যাক্তি জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার থেকে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন। এছাড়া বুধবার সারারাত এবং বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা ১০ মিনিট পর্যন্ত তুমুল সংঘর্ষ চলে। মর্টারশেল ও ভারী অস্ত্রের গোলাগুলিতে
তটস্থ ছিলো তুমব্রু এলাকার মানুষ।
তুমব্রু কোনারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান,বাংরাদেশের অনুপ্রবেশের আশায় মিয়ানমারের মংডু ও বলিবাজার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে বেশ কিছু রোহিঙ্গা । আবার কিছু রোহিঙ্গা ডিঙি নৌকা করে নাফ নদীতে অবস্থান করছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) রোহিঙ্গাদের কোনো বাধা দিচ্ছে না। এতে বাংলাদেশ সীমান্তে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আরো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ভয়ে।
বিগত দিনে এধরণের সংঘাাতে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করে। যারা সীমান্তের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছে ২০১৭ সাল থেকে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারে আবারও উত্তেজনা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সীমান্তের কাছাকাছি বসবাস করা মানুষরা। ইতোমধ্যে অনেক মানুষ ঘর ছেড়েছে। মিয়ানমারে উত্তেজনা শুরু হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে শঙ্কা থাকে। শুনেছি কিছু রোহিঙ্গা সীমান্তের কাছাকাছি আছে। বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।