নাইক্ষ্যংছড়ি-সোনাইছড়ি সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে গাড়ি থামিয়ে ১ ট্রাক( ডাম্পার) চালাককে অপহরণ করেছে একদল পাহাড়ী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ঘুমধুম হায়দার কোম্পানীর ইটভাটা থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে আসার পথে তাকে সড়কের ঘুনগাছ
(শিশুগাছ) তলার পুর্বপাশের লস্বা ব্রীজ এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। অপহৃত ডাম্পার চালকের নাম বেলার হোসেন দিদার (২৮)। সে নাইক্ষ্যংছড়ি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবাইরের গাড়ি চালক। এ সময় তার গাড়ি হেলপার ছিলো আরমান নামের এক যুবক।
ডাম্পারের মালিক মোহাম্মদ জুবাইর জানান অপহরণ ঘটনার পরপরই তার গাড়ির হেলপার মো: আরমান তাকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। শুনে সে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা থেকে পুলিশ নিয়ে গিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে আগে।
তিনি আরো জানান,এ গাড়িটি নিয়ে চালক ঘুমধুমের হায়দার কোম্পানীর ইটভাটা থেকে তার পাওনা ২ লক্ষ টাকা নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ফিরছিলেন। আসার পথেই এ ঘটনা ঘটে।
মালিকের দাবী, অপহরণের ২ ঘন্টা পর তার গাড়ি চালককে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন সন্ত্রাসীরা। তার তথ্য মতে,অপহরণকারীরা সবাই উপজাতি যুবক। তাদের সবার হাতে ভারী অস্ত্র ছিলো। ওরা সংখ্যায় ১৬ জনের জনবল ছিল।
খবর পেয়ে পুলিশ সাথে সাথে অভিযানে নামে তার গাড়ি চালককে উদ্ধারে।
একাধিক সূত্র জানান, এভাবে এক দিকে ২ লাখ টাকায় মুক্তিপণের দরকষাকষি পক্ষান্তরে তাকে উদ্ধারে পুলিশি অভিযান চলে সারা রাত আর বৃহস্পতিবার অর্ধদিন।
পরে তাকে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিন বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে অপহৃতকে অপহরণের ঘটনাস্থল থেকে ৩/৪ কিলোমিটার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী সোনাইছড়ির মারিগ্যা পাড়ার দক্ষিণে সামান্য দূরের একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানান,তাকে টানা ১৭ ঘন্টা অভিযানের পর উদ্ধার করা হয় সোনাইছড়ির হেড়ম্যানপাড়া দক্ষিণের পাহাড় থেকে।
উদ্ধার অভিযানে নেতৃতাদানকারী নাইক্ষ্যংছড়ি থানার সেকেন্ড অফিসার মোহাম্সদ আলমগীর হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন,অভিযানে তার সাথে সোনাইছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোহাম্মদ মনির হোসেনও ছিলেন । তারা পর্যাপ্ত ফোর্স নিয়ে টানা ১৭ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে সোনাইছড়ি পুলিশ ফাঁড়ি দক্ষিণের গহীন পাহাড়ী এলাকা থেকে উদ্ধার করেন।
অপহরণের শিকার চালক দিদার মুক্তি পাওয়ার পর এ প্রতিবেদককে বলেন,অপরণের পর তাকে মারধর করে নি তারা। তার মতে এরা ১৬/১৭ জন হবে। রাতে তাবু টাংগিয়ে তাকে রাখা হয়। শুকনো খাবার দেয় তাকে।
তার হাত-পা -চোখ বেধেঁ রাখা হয়। পরে তাকে অনেক কৌশলে ছেড়ে দেয় এ অপরণকারীরা।
স্থানীয় সূত্র গুলো জানান,এরা পাহাড়ি সন্ত্রাসী। আর অস্ত্রধারী। তারা চাঁদাবাজ। তারা ২ লাখ টাকা চাদাঁ দাবী করেছিলো অপহৃতের কাছ থেকে। তাদের দাবী পূরণ করলেও কেউ স্বীকার করবে না।
এদিকে মুক্তিপণে না নাকি অভিযানে অপহৃতকে উদ্ধার করা হয় সে বিষয়ে কেউ মূখ খুলছেন না বা তা কেউ স্বীকার করছেন না। তবে অপহরণের শিকার এ গাড়ি চালক মুক্তিপেয়ে নিজ বাসায় ফিরেছেন।
অপর দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি -সোনাইছড়ি সড়কে দীর্ঘ ১ যুগ বন্ধ থাকা অপহরণ-ডাকাতির বিষয়টি নতুন করে ঘটার পর পাহাড়ি এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর লোকজনের এ সড়কে যাতাযাত অনেকটা কমে গেছে।