নাইক্ষ্যংছড়িতে বার্মিজ গরু টানা শ্রমিক কতৃক বয়সী বৃদ্ধা ছলিমার খাতুনকে হত্যার ১৭ দিন পর ময়না তদন্তের জন্যে কবর থেকে তার লাশ উত্তোলণ করেছে পুলিশ। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড ও নাইক্ষ্যংছড়িস্থ সহকারী কমিশনার( ভূমি)
উজ্জ্বল রায়ের উপস্থিতিতে এ লাশ তোলা করা হয় ।
মঙ্গলবার ( ৯ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ১১ টায় এ লাশটি উত্তোলন করে ককসবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
সূত্র জানান গেছে,পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়িতে ৫৯ বছরের এক বৃদ্ধাকে গলা টিপে হত্যা করেছে ৩ মাদকাসক্ত নরপশু । বৃদ্ধা এ ধর্ষিতার নাম ছলিমা খাতুন। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার সন্ধ্যা ৭ টায়। আর খুনের ঘটনা প্রকাশ হয় ২৪ ঘন্টা পর সোমবার সন্ধ্যায়। পরে তাকে উদ্ধার করা হয় সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতেই।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ( ২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ১ টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় । যার নম্বর সাত।
পুলিশ জানান, মামলায় ১ জ্ঞাত ও ২ জন অজ্ঞাতনামা সহ আসামী ৩ জন। জ্ঞাত আসামী এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামী। ঘটনার পর একজনকে আটক করেছে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আবু বক্করের নেতত্বে জনতা।
তার নাম জয়নাল আবেদীন পুতুইয়্যা (১৬) । সে স্থানীয় গুরুন্যাকাটার মামা-ভাগিনার ঝিরি এলাকার সাইফুল ইসলামের পুত্র। যাকে পরে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে তারা।
মামলার বাদী রোমেনা আক্তার এজাহারে উল্লেখ করেন,স্বামী পরিত্যক্তা তার মা একাই বসবাস করেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামে।
তিনি টিন সেট পুরোনো বেড়ার ঘরে বসবাস করতেন। তার ২ টি গরু ছিলো। হত্যাকারীরা ঘটনার দিন ২৪ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় তার মাকে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে হত্যা করে। হত্যার ২৪ ঘন্টার মাথায় সোমবার সন্ধ্যায় জয়নাল আবেদীন নিজেই স্থানীয় গ্রামের শামশুল আলম নামের এক লোককে হত্যাকান্ডের গোপনখবর প্রকাশের পর এ খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। স্বজনরা মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় মেম্বারের নেতৃত্বে তুলাতলী স্কুল সংলগ্ন কবরস্থানে কবরস্থ করা হয় ছলিমাকে।
রোমেনা আরো জানান,তার মায়ের সেই গরু ২ টি জোর করে নিয়ে যাওয়ার সময় বৃদ্ধা ছলিমা বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দস্যুরা
তার মায়ের গলা টিপে তাকে হত্যা করে গরু দু'টি নিয়ে যায়। পরে এ গরু পাশ্বর্বর্তী শুকমুনিয়া গ্রামে জব্দ করা হয়।
এদিকে সোমবার রাতে জনতার হাতে আটকের পর হত্যাকান্ডের নায়ক জয়নাল আবেদীন বারবার বলেছিলেন,তারা ৩ জন এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত । এ সময় তারা ইয়াবা টেবলেট খেয়ে মাতাল ছিলো। ঘটনার দিন ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ছলিমা বেগম তাকে ঔষধের জন্য পাঠায় তুলাতলী স্টেশনে। একটি দোকান থেকে সে ১টি পলপ্লাস ও ১ টি ঘুমের ঔষধ নিয়ে ছলিমাকে খাইয়ে দেয় তারা । ঔষধ খেয়ে ছলিমা গভীর ঘুমে আছন্ন হয়ে পড়ে।
পরে তারা ৩ জন পালা দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে বলে দাবী সে। যা শতশত গ্রামবাসী শুনেছেন বলে দাবী করেন তারা । যাদের মধ্য রয়েছে গ্রাম পুলিশ আবু বক্কর,তুলাতলীর সমাজ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন লালু ও শফিক আহমদসহ অগনিত গ্রামবাসী। মামলার বাদি রোমেনা খানমও এ প্রতিবেদকের কাছে এ দাবী করেন বার বার।
তবে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা নাইক্ষ্যংছড়ি থানার এসআই তৌফিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন,সবে মাত্র এজাহার দায়ের হয়েছে। আর্জিতে দসূতার ঘটনা পরবর্তী বৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। অন্য কোন ঘটনা অনুক্ত থাকলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তখন দেখা যাবে।