বান্দরবানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) গত ২রা এপ্রিল তারাবী নামাজরত মুসল্লিদের উপর বর্বরোচিত হামলা,
সকারী কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি করে হামলা, অর্থ লুটের উদ্দেশে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া এবং তার পরের দিন
৩ এপ্রিল থানচি উপজেলায় স্থানীয়বাসীদের জিম্মি করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও দু'টি ব্যাংক লুট
করার মতো হীন কার্যক্রমের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বান্দরবান শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।বৃহস্পতিবার( ৪এপ্রিল) পার্বত্য জেলা পরিষদে সম্মেলল কক্ষে বান্দরবান শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি'র আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তিপ্রতিষ্ঠা কমিটির আহ্বায়ক
ক্য শৈ হ্লা'র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মূখপাত্র কানঞ্চ জয় তংচগ্যা, বম সোস্যাল কমিটির সভাপতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠা লিয়াজু কমিটির সদস্য লাল জার বম, সদস্য সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনুসহ কমিটির ১৩জন সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে শান্তি কমিটির আহবায়ক ক্য শৈ হ্লা বলেন, সশস্ত্র সংগঠনকুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য গত ২৯ মে ২০২৩ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অরুণ সারকী টাউন হলে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ জুন ২০২৩ইং তারিখে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি
গঠিত হয়। পরবর্তীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফ এর মধ্যে কয়েক দফা ভার্চুয়াল মিটিং এর পরে উভয়
পক্ষের মতামতের ভিক্তিতে সরাসরি সংলাপে বসার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। তারই ধারা বাহিকতায় গত ৫ নভেম্বর ২০২৩ এবং
৫ মার্চ ২০২৪ ইং দু'দফা সরাসরি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। উভয় সংলাপে কেএনএফ এর সকল প্রকার সশস্ত্র
কার্যক্রম হতে বিরত থাকা ও অন্যান্য বিষয় সংক্রান্ত দু'টি সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়। কিন্তু সংলাপ চলাকালীন সময়ে তারা সম্পূর্ণভাবে
চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। এসব ঘটনায় কমিটির তরফ থেকে তাদের বার বার অবগত ও সর্তকবানী দেয়া হলেও এতে তারা কর্ণপাত করেনি। বরং বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয়বাসীদের উপর হামলা,
অপহরণ, চাঁদা বাজিসহ নানান সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
অতি সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি তীব্র ভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির চলমান সকল ধরনের প্রচেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
এমতাবস্থায় এ কমিটি মনে করে যে, এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সাথে সংলাপ
করার সকল ধরনের সুযোগ ও পথ বন্ধ করে দিয়েছে। বিধায় আগামীতে কুকি-চিন এর সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না ।
পরিশেষে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা জোরদারকরণ, রাষ্ট্রের সম্পত্তির সুরক্ষা প্রদান এবং অপহৃত সোনালী ব্যাংক
ম্যানেজার-কে নিঃশর্ত ভাবে সুস্থ্য ও নিরাপদে মুক্তির জোর দাবী জানিয়েছেন তিনি।