আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সেনাবাহিনীর অভিযানে পানছড়িতে অপহৃত ৩ ইউপিডিএফ নেতা উদ্ধার

মোবারক হোসেন, খাগড়াছড়ি: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:০১:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে গত ১১ ডিসেম্বর দিনগত রাতে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক কর্তৃক অপহৃত ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের ৩নেতাকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক বারোটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টিম অভিযান  পরিচালনা করে পানছড়ি উপজেলার ৪ নং লতিবান ইউনিয়নের তারাবনছড়া এলাকা থেকে অক্ষত অবস্থায়  তাদের উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতরা হলেন, ইউপিডিএফ সংগঠক নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরা। উদ্ধারকৃতদের সবাইকে পানছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হয়।

 

উদ্ধারকৃতরা সবাই শারীরীকভাবে সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে। উদ্ধারকৃত দুই ইউপিডিএফ নেতা জানিয়ে তাদের অপহরণ ও উদ্ধারের ঘটনা বর্ণনা করেন এবং তাদের উদ্ধার করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

 

গত সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে পানছড়ি উপজেলার অনিল পাড়া নামক গ্রামের একটি বাড়িতে ঢুকে সেখানে অবস্থানকরা ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের মূল ও অঙ্গ সংগঠনের ৭ জনের উপর ব্রাশফায়ার করে দূর্বৃত্তরা। এসময় ৪ জনকে হত্যার পর সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন- পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ পিসিপির সাবেক কেন্দ্ৰীয় সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পিসিপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা লিটন চাকমা ও ইউপিডিএফ সদস্য রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা।

 

নিহতদের মধ্যে বিপুল চাকমার বাড়ি চেঙ্গী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের করল্যাছড়ি বুদ্ধধন পাড়ায়; সুনীল ত্রিপুরার বাড়ি মাটিরাঙ্গা উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের সুরেন্দ্র রোয়াজা হেডম্যান পাড়ায়; লিটন চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের দ্রোনচার্য্য কার্বারি পাড়ায়; রুহিন বিকাশ ত্রিপুরার বাড়ি পানছড়ির উপল্টাছড়ি ইউনিয়নের পদ্মিনী পাড়ায় বলে জানা গেছে।

 

এ ঘটনার জন্য গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন ইউপিডিএফ নেতা অংগ্য মারমা। তিনি জানান, মঙ্গলবার এলাকায় যুব সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সেজন্যই তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন। নব্যমুখোশধারী গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ’র সভাপতি শ্যামল চাকমা বলেছেন, পাহাড়ে বেশ কয়েকটি সংগঠন রয়েছে, তারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংগঠনিক কাজে বিপুল চাকমাসহ ৭ জন নেতাকর্মী সোমবার লোগাঙ এলাকায় ছিলেন। তারা রাতে অনিল পাড়া গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রাত আনুমানিক ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে সশস্ত্র দুর্বৃত্ত দল ওই বাড়িতে হানা দিয়ে চারজনকে হত্যা করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। গোলাগুলির ঘটনায় ঐ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। এ ঘটনার পানছড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ইউপিডিএফ চার দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।