আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের কয়েকদিন ধরে বাড়তে থাকা ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।
এতে বলা হয়, গত সাত দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫৬ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ৪৬ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন। ৪ জনকে রেফার করা হয়েছে। ৬ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন। রেফারকৃত রোগীরাও সুস্থ রয়েছেন। গত সাতদিনে এ উপজেলায় কোন ডায়রিয়ার রোগীর মৃত্যু নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আলীকদম উপজেলায় কযেকদিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা হঠাৎ বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি নজরে আসার সাথে সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা সুবিধা জোরদার করা হয়। মাঠপর্যায়ে কর্মীদের পাশাপাশি র্যাপিড রেসপন্স টিমের সদস্যদের সতর্কাবস্থায় রাখা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং মাঠপর্যায়ে স্যালাইন, ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধকরন টেবলেট সরবরাহ করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. মো: মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জানান, মাঠকর্মীরা পাহাড়ের পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে ডায়রিয়া রোগী সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করেন। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব থাকা সত্ত্বেও দুর্গম এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত পাড়াগুলোর জনপ্রতিনিধি, কারবারী ও স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের মাধ্যমে স্যালাইন, ঔষধ ও পানি বিশুদ্ধকরন টেবলেট সরবরাহ করা হয়।
তিনি বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে কুরুকপাতা বাজারে গত ৫ মে ডা. বেলাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালিত হয়।
সম্প্রতি কুরুকপাতা ইউনিয়নের কয়ে কটি পাড়ায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির খবরে জরুরী ভিত্তিতে মেডিকেল টিম প্রেরণ করা হয়।
এ মেডিকেল টিম ৯ ও ১০ জুন এ ইউনিয়নের ৯টি পাড়া চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করেন। গত ১১ জুন ডা. বেলাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আরেকটি টিম দুর্গম দোছড়ি বাজার এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়।
প্রতিবেদন বলা হয়, সতর্কতার অংশ হিসেবে কুরুকপাতা ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ি পল্লীর বাসিন্দাদের মাঝে গত ৯দিনে ১ হাজার ১১৫টি স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ১০ হাজার ৪০০টি, মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট ১ হাজার ৬৮০টি বিতরণ করা হয়। দোছরি বাজার এলাকায় ১০০টি করে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও জিংক ট্যাবলেট দেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা আরো বলেন, মেডিকেল টীম গত ৭দিনে দুর্গম পাড়াগুলোতে ইপিআই টিকা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান, কারবারী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় এবং ম্যালেরিয়া টেস্ট করা করেন। এছাড়াও ৯টি পাড়ার ১৫৫টি পরিবারের মাঝে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র প্রদান করা হয়।