বান্দরবানের লামায় স্ত্রী ও তার পরকিয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামী মো. সুজন হোসেনকে (২৮) শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (০১ জুলাই) পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে নিখোঁজের দুইদিন পর ২৩ জুলাই সকাল ১১ টার দিকে লামা সদর ইউপির মেরাখোলা মাতামুহুরি নদী থেকে নিহত সুজনের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে লামা থানা পুলিশ। সুজন লামা পৌরসভার নয়া পাড়া ২নং ওয়ার্ডের মৃত চুকু মিয়া ও মাতা পারুল বেগমের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে সুজনের সঙ্গে বিয়ে হয় সাবেক বিলছড়ির এলাকার নূর বানুর। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী নিয়ে শাশুড় বাড়ীতে থাকতেন সুজন। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি বেশ দীর্ঘদিন যাবত চকরিয়ার আবু জানিফ নামে এক ছেলের সঙ্গে গোপনে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে স্ত্রী নূর বানু। গত (২১ জুলাই) রাতে ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে সুজনকে অচেতন করেন স্ত্রী। পরে রাতের আঁধারে প্রেমিক হানিফের সহযোগীতায় গামছা দিয়ে পা বেধেঁ মুখে কম্বল ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করেন তাকে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো: শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে লামা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন জানান,গত ২৩/০৭/২০২৪ খ্রি: তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় লামা থানাধীন ০২ নং লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা এলাকায় মাতামুহুরী নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মরদেহ পাওয়া যায়। লামা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।লাশের শরীরে পচন ধরে, ফুলে বিকৃত অবস্থায় ছিল। লাশের পরিহিত কাপড় চোপড় দেখে তা উপরে বর্ণিত ভিকটিমের মরদেহ মর্মে সনাক্ত হয়। এরপর পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট এবং পোস্ট মর্টেম সম্পন্ন করে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়।
ভিকটিমের ভাই মো: শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে লামা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোপন সোর্স নিয়োগ করে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য
উদঘাটন এবং আসামীদের সনাক্তের জন্য ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে। প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ০২ জন আসামী গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শামিম শেখ বলেন, মামলার পর পুলিশ ঘাতক স্ত্রী ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ে হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।