বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনা বাহিনীর সাথে জেএসএস সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ১জন সেনা অফিসার ও ৩ জন সন্ত্রাসী নিহতের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায়। বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান সেনা রিজিয়নের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেএসএস সন্ত্রাসীদের একটি দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজি জন্য আগমন
করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প হতে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি টহল দল বথি পাড়ার উদ্দেশ্যে গমন করেন। রাত আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে টহল দলটি উক্ত এলাকায় পৌঁছালে পাড়ার নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সেনা বিহীনিকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে। জবাবে সেনা টহল দলের সদস্যরাও সন্ত্রীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৩ঘন্টা বন্দুক যুদ্ধ চলে। বন্দুক যুদ্ধের এক পর্যায়ে সন্তু লারমা নেত্বাধীন জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এসময় সেনা বিহীনির গুলির মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি ছোঁড়া গুলিতে মাথায় গুলি বৃদ্ধ হয়ে সেনা বাহিনীর টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং ফিরোজ নামে এক সেনা সদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। আহত সেনা সদস্যকে আজ সকালে রুমা হতে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।
পরে অভিযানে সেনা টহল দল উক্ত এলাকা তল্লাশী চালিয়ে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ১ টি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড তাজা গুলি, ৩ টি এম্যোনিশন ম্যাগাজিন, ৩ টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজির নগদ ৫২৯০০ টাকা উদ্ধার করে। বর্তমানে সেনা টহল দল উক্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাশী জারি রেখেছে এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।
সেনা বাহিনী আরো জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির অনুচ্ছেদ ঘ এর ধারা অনুযায়ী সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেওয়ার মাধ্যমে তৎকালীন শান্তিবাহিনী সকল সদস্যের আত্মসমর্পণের শর্ত থাকলেও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এর শসস্ত্র সন্ত্রাসীরা তা ভঙ্গ করে চুক্তি সম্পাদনের পরবর্তী সময় হতেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী লালন করে আসছে। যদিও প্রায়শ সন্তু লারমা ও তার দল সরকারের বিরুদ্ধে শান্তি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ করে থাকে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে তৎপর চারটি আঞ্চলিক দল হত্যা, গুম ,চাঁদাবাজি ইত্যাদি দুষ্কৃতিমূলক কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ের নিরীহ সাধারণ মানুষের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। পাশাপাশি সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ হতে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড সৃষ্টি পায়তারা করছে, যা নিঃসন্দেহে দেশদ্রোহিতার শামিল। এ পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।