আজ মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মারাইংতং পাহাড়ে পর্যটকের উপচেপড়া ভীড়

প্রশান্ত দে, আলীকদম প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৩:২৩:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

পর্যটকে উপচেপড়া ভীড়ে তিল ধারণের ঠাই নেই মারাইংতং জাদী পাহাড়ে। ধারণ ক্ষমতার অধিক পর্যটকে চাপ সামলাতে হিমশিম পর্যটক সংশ্লীষ্টরা। অনিয়ন্ত্রীত লোকের আগমনে নিরাপত্তা চরম উপক্ষিত এবং পরিবেশের উপর পড়ছে বিরোপ প্রতিক্রিয়া। 

 

টানা সরকারি ছুটিতে অধিক পর্যটক আগমন হয়েছে আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সমূহে। মারাইংতং জাদী পাহাড়ে ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করে রেকট সংখ্যক পর্যটক আগমনে বিষ্মিত স্থানীয়রা। তারা মারাইংতং পাহাড়কে রোহিঙ্গা শিবিরে সাথে তুলনা করছেন। নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত গাইডদের দোরাত্যে পর্যটকের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। গত ১৭ তারিখ অনিবন্ধিত একজন গাইডের হাতে এক পর্যটকে চুরি ধারা আঘাত করে আহত করার ঘটনাও ঘটেছে। পরে ওই গাইডের এক সহযোগিকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

 

সরজমিনে দেখা গেছে মারাইংতং পাহাড়ে ২০০টির বেশি তাবু গেড়ে থাকছে পর্যটকরা। টানা ছুটি প্রতিদিন আগমন ঘটছে ৫০০ জনেরও বেশি পর্যটক। ফলে স্থানীয় অর্থনীতির উপরে চাপ পড়েছে। পাহাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রাণীর বিরোপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

 

স্থানীয় অধিবাসী মেনওয়াই ম্রো জানান, মারাইংতং পাহাড়ে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, গুইশাপ, শিয়াল, বন মুরগসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি দেখা গেলেও তা এখন আর চোখে পড়েনা।

 

প্রাকৃতিক পরিবেশের অপূর্ব নিদর্শন মারাইংতং পাহাড়ের অন্যতম আকর্ষণ হলো পাহাড় ও মেঘের উপর থেকে সূর্যদয় ও সূর্যাস্থ দেখা। অনেকে কুলাহল মুক্ত পরিবেশে আসে অবকাশ নিতে। পর্যটকদের আনন্দ ও প্রশান্তির কমতি রাখে না মারাইংতং পাহাড়। কিন্তু দিন দিন পর্যটকের উপচে পড়া ভীড়কে নিয়ন্ত্রনের দরকার বলে মনে করছে স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশ বিদেরা।

 

পুরো পহাড় ঘুরে দেখা যায় যেখানে সেখানে প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থে ভরা বিশেষ করে খাবারের প্যাকেট ও পানির প্লাস্টিকের বোতল। টয়টের ব্যবস্থা না থাকায় প্রাকৃতিক ডাক আসলে প্রকৃতিতেই সেরে ফেলছে লতা গুল্ম ও পাহাড়ের আড়ালে। অন্যদিকে মরাইংতং পাহাড়কে ঘিরে স্থানীয় শিশুরা শিশুশ্রমে জড়িয়ে পড়ছে। পর্যকেদের খাবার,ভারি ব্যাগ,পানির বোতলসহ নানা জিনিসপত্র শিশুরা বয়ে নিয়ে পাহাড়ে তুলতে দেখা যায়।

 

স্থানীয় প্রশাসনে তেমন কোন  উদ্যোগ চোখে পড়েনি মারাইংতং পাহাড় ঘিরে। দৈনিক আগত পর্যটকদের জন্য টলেট নির্মান অাবশ্যকিয় হয়ে পড়লেও তার ব্যবস্থা নাই। উল্টো অপ্রয়োজনীয় দুইটি দোলনা স্থাপন করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম বলেন, মারাইংতং জাদীকে ঘিরে সরকারে পরিকল্পনা রয়েছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পর্যটক সুযোগ সুবিধা গুলো দেখা হচ্ছে। পাহাড়ের চূড়া হওয়ায় পানির তেমন উৎস না থাকায় টয়লেট নির্মাণ সহজ নয় বলে তিনি মনে করছেন। তবে খুব শীঘ্রয় তার ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানান। 

 

আলীকদম উপজেলার স্থানীয় যুবক পরিবেশ রক্ষা ও সমাজ উন্নয়নমুল সংঘটন(পর্বত) এর  সভাপতি মু.জুলকার নাইন বলেন। আলীকদমে পর্যটক আসুক আমরা চাই, কিন্তু পর্যটকের চাপ সামলানো না গেলে  মারাইংতং পাহাড়ের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। ইতোমধ্যে স্থানীয় হোটেল, রিসোর্ট সমূহের ব্যয় বেড়ে গেছে, স্থানীয় উৎপাদিত পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে পর্যটন মৌসুমকে কেন্দ্র করে দিন দিন। ফলে অর্থনীতিক অবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে।