গত ১৯ এপ্রিল ভারতের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট হয়েছে গত ১ জুন। এরপর ৭২ ঘণ্টার অপেক্ষা শেষে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে ভোটগণনা শুরু হয়েছে। প্রথমে পোস্টাল ব্যালটে পড়া ভোট গণনা শুরু হয়। এরপর একে একে খুলতে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। এই যন্ত্রে আপাতত বন্দি রয়েছে প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ।
সকাল ৮টা বাজতেই পুরো দেশের ৫৪২টি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ভোটগণনা। সুরাত কেন্দ্রে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। ফলে গণনা শুরুর আগেই এক আসনে এগিয়ে গেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। প্রাথমিক তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ভোট গণনায় এগিয়ে আছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ। ভোট গণনার প্রথম আধাঘণ্টায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ এগিয়ে আছে ১৭১টি আসনে। ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ৬৮টি আসনে এবং অন্যরা এগিয়ে ৪টি আসনে।
গত আড়াই মাস ধরে মোট সাত দফায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশটির প্রধান উৎসব সাধারণ নির্বাচনে ভোট হয়েছে। রোদ, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। এই নজির বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। ভোট কি কেবলই মাঠে-ময়দানে প্রচার? এবারের সাধারণ নির্বাচন ছাপিয়ে গেছে আগের সব নজির। এবার সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চলেছে সামাজিক মাধ্যমেও।
মাঠে-মোবাইলে এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বিশ্ব আগে দেখেনি। সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সব রেকর্ড উড়িয়ে দিয়ে ভারতের লোকসভা ভোট বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন হয়ে উঠেছে।
আড়াই মাস ধরে চলা লোকসভা ভোটের একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে দেশ। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রচারণায় ব্যস্ত থেকেছেন। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ থেকে মল্লিকার্জুন খড়েগ, রাহুল গান্ধী, মমতা ব্যানার্জী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এম কে স্ট্যালিন, শরদ পওয়ারের মতো নেতারা চুটিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও।
ভোটের একেবারে শুরু থেকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী তথা নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি দাবি করেছিল তারা ‘চারশো পার’ করবে। সপ্তম দফার ভোট শেষ হওয়ার পরেই দেশজুড়ে একাধিক সংবাদমাধ্যম বুথফেরত সমীক্ষার আয়োজন করেছিল। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রায় সব বুথফেরত সমীক্ষা বলছে, বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ অন্তত সাড়ে তিনশো বা তার বেশি আসনে জিতবে। বিজেপি একা গত লোকসভা ভোটের মতোই ৩০০-র বেশি আসন জিততে পারে।
যদিও অতীতে দেখা গেছে, বুথফেরত সমীক্ষা সব সময় মেলে না। তবে মোটামুটি একটা আভাস পাওয়া যায়। এবার সব বুথফেরত সমীক্ষা প্রায় একই রকম পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট সব বুথফেরত সমীক্ষা নাকচ করে দাবি করেছে, তারা ২৯৫টির বেশি আসনে জিততে চলেছে।