প্রেন চ্যুং ম্রো ও জেসপারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী প্রেন চ্যুং ম্রো ও মিক্সড মার্শল আর্ট ক্রিড়াবীদ জেসপারের পাশে দাঁড়ালেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈহ্লা। বুধবার ২৩ শে নভেম্বর বিকালে পার্বত্য জেলা পরিষদ এর কার্যালয়ে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা জেলার এই দুই ক্রিড়াবীদকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এসময় প্রেন চ্যুং ম্রো’কে মাসে ৪ হাজার টাকা শিক্ষা ভাতা ও ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। এসময় জেসপারকে ২০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয় এবং আমেরিকায় ৯ মাসের প্রশিক্ষনের জন্য যাওয়া ও আসা খরচ বাবদ ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করার ঘোষনা দেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। এর আগে জেসপার থাইল্যান্ডে ৩ মাস প্রশিক্ষন গ্রহন করে পার্বত্য জেলা পরিষদ এর সহায়তায়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম পাহাড়ে এখন আলোচনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বান্দরবানের সন্তান প্রেন চ্যুং ম্রো। পা দিয়ে এক মিনিটে সর্বোচ্চ ২০৮ বার ফুটবল ট্যাপ (Toe ap) করে এ অসমান্য রেকর্ড অর্জন করেন তিনি। এক মিনিটে সবচেয়ে বেশি বার পা দিয়ে ফুটবল ট্যাপ করার রেকর্ডটি ছিল ঢাকার মুন্তাকিমুল ইসলাম নামে এক যুবকের। তিনি ১ মিনিটে ২০৭ বার ফুটবল ট্যাপ করেছিলেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই রেকর্ডটি করেন তিনি। বর্তমানে ৩০ সেকেন্ডে সর্বোচ্চবার (১০৭ বার) ফুটবল ট্যাপ করার রেকর্ডটিও তার দখলে। প্রেন চ্যুং জানান, তিনি যখন এই রেকর্ডটি করার চিন্তা করেন তখন এটি কুমিল্লার কনক কর্মকারের দখলে ছিল। কনক এক মিনিটে ১৯৭ বার ফুটবল ট্যাপ করেছিলেন। কনক কর্মকারের এই এই রেকর্ডটি দেখার পর থেকে তিনি তা ভাঙার মনস্থির করেন এবং অনুশীলনে নেমে পড়েন। অনুশীলনের দুই দিনেই তিনি কনক কর্মকারের সেই রেকর্ড ভাঙার সক্ষমতা অর্জন করেন। এরপর, এ বছরের ৩ মে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ‘মোস্ট ফুটবল (সকার) টু ট্যাপস ইন ওয়ান মিনিটস’ ক্যাটাগরিতে কুমিল্লার কনক কর্মকারের রেকর্ড ভঙ্গ করার আবেদন জানিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন। আবেদনের প্রায় এক মাস পর গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয়। তারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের নির্দেশনা জানায়। সেই নির্দেশনা মেনে গত ২৪ এপ্রিল তিনি ১ মিনিটে পা দিয়ে সর্বোচ্চবার (২০৮) ফুটবল ট্যাপ করার ভিডিও করে ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি সংযুক্ত করে গিনেস কর্তৃপক্ষকে পাঠান। এর মধ্যে আবার ঢাকার মুন্তাকিমুল ইসলাম কনক কর্মকারের রেকর্ড (১৯৭ বার) ভেঙ্গে ১ মিনিটে ২০৭ বার ফুটবল ট্যাপ করে রেকর্ড করেন। বান্দরবানের দুর্গম রুমা উপজেলার কেওক্রাডং পাহাড়ের নিচে পুরাতন রুমানা পাড়ার বম সম্প্রদায়ের সন্তান জেসপার। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ভারতে মিক্সড মার্শাল আর্ট ফাইটিং শুরু করেন। পরে ২০২০ সালের মার্চে ২য় ম্যাচ খেলেন তিনি। দুই ম্যাচেই প্রথম রাউন্ডে নক আউট জয় লাভ করেন। চলতি বছরের ২১মে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফাইনাল চ্যাম্পিয়নশীপে খেলতে যান তিনি। মিক্সড মার্শাল আর্টকে (এমএমএ) জনপ্রিয় করতে মার্কিন ব্যবসায়ি আর্ট ডেভি ও ব্রাজিলিয়ান রবিওন গ্রেসির যৌথ প্রচেষ্টায় ১৯৯৩ সালে জন্ম নেয় আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ। বক্সিং, জুজুৎসু মুয়াই থাই, কারাতে, জুডোর সংমিশ্রণকে এক সঙ্গে বলা হয় মিক্সড মার্শল আর্ট। মার্কিন ব্যবসায়ি ডানা হোয়াইটের হাত ধরে এখন বিশ্ব জুঁড়ে বেশ জনপ্রিয় মিক্সড মার্শাল আর্ট। বিশ্বের লাখ লাখ ফাইটারদের জন্য এখন ইউএফসি সর্বোচ্চ চূড়া। আর সেই চূড়ার দিকে নজর এখন বান্দরবানের জেসপারের। এবার উন্নত প্রশিক্ষনের জন্য ৯ মাসের জন্য যাচ্ছেন আমেরিকায়।