বান্দরবানের চিম্বুক সড়কের ওয়াইজংশন এলাকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে স্থানীয় দরিদ্র জুমিয়া ম্রো জনগোষ্টির আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মিত বানিজ্যিক ভবন অবৈধ ভাবে দখল করে বিলাসবহুল আবাসিক হোটেল ও রেষ্ঠুরেন্ট নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে পরির্দশন করে জান যায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ণ বোর্ড প্রায় ২৫লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪টি দোকান ঘর নির্মাণ করে। পরে তা ম্রো জনগোষ্টিকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে উন্নয়ণ বোর্ডের অর্থায়নে করা ম্রো জনগোষ্টির সেই দোকান ঘর দখল করে তার উপর নির্মাণ করছে বিলাস বহুল আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। স্থানীয়রা জানায়, গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বান্দরবান চিম্বুক সড়কের ওয়াইজংশন এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে স্থানীয় দরিদ্র জুমিয়া ম্রো জনগোষ্টির আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় ২৫লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি পাকা একতলা বানিজ্যিক ভবন নির্মান করা হয়। পরে ভবনটির নির্মান কাজ শেষ হলে ম্রো জনগোষ্টির প্রতিনিধি হিসাবে ম্রো নেতা রাংলাই ম্রো কে বুঝিয়ে দেয়া হয়। বানিজ্যিক ভবন নির্মানের পর থেকে স্থানীয় জুমিয়া দরিদ্র কৃষকরা তাদের জুমে উৎপাদিত আম,আনারস,কলা,কুলসহ নানান কৃষিপন্য বিক্রির মাধ্যে ভবনটি ব্যবহার করে আসছে।গত বছর ম্রো নেতা রাংলাই ম্রো সরকারী অর্থায়নে নির্মিত কিন্তু বর্তমানে রাংলাই ম্রো নিজেই ম্রো জনগোষ্ঠির এ ৪টি দোকান জায়গাসহ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাসিন্দা রিপনের কোটি টাকার বিনীময়ে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। আর সেই ভবনের দোকান ভেঙ্গে নির্মাণ করছে একটি আধুনিকমানের বিলাসবহুল আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্ট নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা মোঃ ফরিদ জানান, মোঃ রিপন নামের চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ী এ রেস্টুরেন্টটি নির্মাণ করছে। আর এ কাজের দেখাশুনা করছেন তিনি। ব্যবসায়ী রিপনের সাথে যোগাযোগ করার মুঠোফোনের নম্বর চাইলে ফরিদ জানান, রিপনের নম্বর দেয়ার অনুমতি নেই এবং তার সাথে যোগাযোগও করা যাবেনা। তবে বিষয়টি নিয়ে রাংলাই ম্রোর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি। এদিকে বান্দরবান চিম্বুক সড়কের ওয়াইজংশন এলাকার ম্রো সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ণ বোর্ডের সরকারী অর্থায়নে গড়ে তোলা এ ৪টি দোকানের দায়িত্বে ছিলেন রাংলাই ম্রো। তিনি সরকার দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের দখলে দিয়েছেন। এতে এলাকার ম্রো সম্প্রদায়ের অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসময় তারা তদন্তপূর্বক সরকারী দোকান দখল ও তার উপর রেস্টুরেন্ট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানসহ জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ণ বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মো: ইয়াছির আরাফাত বলেন, কয়েকবছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ণ বোর্ডের অর্থায়নে ৪টি দোকানঘর নির্মাণ করে তা ওই এলাকার একটি সমিতিকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এটি রাংলাই ম্রো অবৈধ ভাবে দখল করে বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট তৈরী করার ঘটনা শুনেছি। বিষয়টা আমি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাংলাই ম্রো উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মিত দোকান ঘর ভেঙ্গে হোটেল ও রেষ্ঠুরেন্ট নির্মান করার কথা স্বীকার করে বলেন,দোকানের পরির্বতে পাশে দোকান নির্মান করে দেয়া হবে। এখানে আবাসিক হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট নির্মান করে দেশের সেবা করছে বলে তিনি জানান।