পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান। শহরের হোটেল-মোটেল ও প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র জুড়ে আনাগোনা বেড়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। এদিকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বছরের শেষ দিনে ইংরেজি বর্ষবরণ উদযাপনে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে বান্দরবানে। বছরজুড়ে পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও বিশেষ ছুটি ও শীতে বান্দরবানে পর্যটক বাড়ে কয়েকগুণ।
শুক্র-শনি দুইদিনের সাপ্তাহিক ছুটি ও ব্যাংক হলিডে উপলক্ষে পর্যটক আসতে শুরু করেছে বান্দরবানে। এরই মধ্যে অধিকাংশ হোটেলের প্রায় ৫০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে। ফলে জমে উঠেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ও।
জেলার মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক, শৈল প্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরিসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে এখন পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। পাহাড়, নদী আর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে বিমোহিত হচ্ছেন পর্যটকেরা।
ঢাকা থেকে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় দেখতে আসা রহমান আলী জানান, গত দুই বছর করোনার কারণে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয়নি। এবার পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো থাকায় বান্দরবান এসেছি। বান্দরবানে বর্ষবিদায় আর বরণ শেষে আবারও নিজ গন্তব্যে ফেরত যাব।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে বান্দরবানে বেড়াতে আসা মো. রাফি জানান, মেঘলা, শৈল প্রপাত, নীলগিরিসহ কয়েকটি স্পট ঘুরেছি। এখানকার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছি। না আসলে বোঝা যেত না বান্দরবান কী সুন্দর!
এদিকে পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে নতুন সাজে সেজেছে জেলার হোটেল-মোটেল আর গেস্টহাউসগুলো। বান্দরবানের হিলভিউ আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার মো. কাউছার জানান, আমাদের হোটেলের ৫০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পর পর্যটকের দেখা পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। সেই সঙ্গে পর্যটকদের সার্বিক সেবা দিতেও আমরা প্রস্তুত।
বান্দরবানের গ্র্যান্ড ভ্যালী আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার মো. সুমন জানান, নতুন বছর উপলক্ষে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটেছে। অনেক পর্যটক আমাদের হোটেলের আতিথেয়তা নিয়েছেন।
বান্দরবানের আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর পর্যটক উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে বান্দরবানে। বান্দরবানে পর্যটকদের আগমনকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সেই সঙ্গে পর্যটকরা যাতে এখানে নিরাপত্তার সঙ্গে অবস্থান করতে পারেন, সেজন্য আমরা সব আবাসিক হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছি।
বান্দরবান সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মির্জা জহির উদ্দিন বলেন, পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। পোষাকে এবং সাদা পোষাকে আমাদের পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সজাগ রয়েছেন।
শান্তি ও সম্প্রীতির শহর বান্দরবান। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য, বিশাল পাহাড়, ১২টি জাতিগোষ্ঠীর সহ-অবস্থান, আর লোভনীয় পর্যটন স্পটের কারণে প্রতিনিয়তই পর্যটকেরা ভিড় জমায় এ জেলায়। তাইতো পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বদা প্রস্তুত প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।