আজ মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১

দোহাজারীতে নাগরিক সেবা পেতে বিড়ম্বনা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহনের দাবি

মোঃ আয়ুব মিয়াজী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২২ অক্টোবর ২০২২ ১০:৪৩:০০ পূর্বাহ্ন | দক্ষিণ চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলাধীন দোহাজারী পৌরসভায় নাগরিক সেবা দীর্ঘসূত্রতায় বাধা থাকায় স্থানীয় জনসাধারণ বিড়ম্বনা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি করতেছে। পৌরসভাকে কোন বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ ধারা ৮৩ বা ধারা ৮৪ এর অধীন নতূন কোন করারোপের ক্ষেত্রে পৌরসভা সরকারের অনুমতি গ্রহণ করিবে উল্লেখ থাকলেও দোহাজারী পৌরসভার কর্মকর্তাগণ সেবা প্রার্থীর নিকট হতে নাগরিক সনদ, জন্ম সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, পারিবারিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, চারিত্রিক সনদ, অবিবাহিত সনদ, বিবাহিত সনদ, প্রতিবন্ধী সনদ, পুণঃবিবাহ না হওয়া সনদ, ভোটার আইডি স্থানান্তর, নদী ভাঙনের সনদ, অনাপত্তি পত্র, একই নামে প্রত্যয়ন, অনুমতি পত্র, মৃত্যু সনদ, বার্ষিক আয়ের প্রত্যয়ন, ভূমিহীন সনদ, প্রত্যয়ন পত্র, নতুন বা পুরাতন হোল্ডিং টেক্স, ইমারত নির্মাণ ব্যবস্থাপনা ফি সহ টেন্ডার ও দরপত্রের মাধ্যমে ট্রেক্স আদায় করলেও শুধুমাত্র কর নেওয়ার সময় পৌরসভা। কিন্তু এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘবের জন্য এবং আধুনিক জীবন-যাত্রা নিশ্চিত করার জন্য অর্জিত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করার কথা থাকলেও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা লক্ষ করা যাচ্ছে এই পৌরসভাটিতে। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিয়ের নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, চাকরিতে নিয়োগ, ব্যাংক হিসাব খোলা, ট্রেড লাইসেন্স, জমির নিবন্ধনসহ অন্যান্য মৌলিক সেবা পেতে জন্মসনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র লাগে। অনেকে ঘুষ দিয়ে বা দালাল ধরেও সঠিক সময়ে পৌরসভা থেকে জন্মসনদ ও নাগরিক সেবা পান না। নির্বাচিত পৌর মেয়র না থাকায় সংশ্লিষ্ট পৌর প্রশাসন অনেক সময় এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক না হবার কারনে জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সেবা পেতে মানুষের বিড়ম্বনার শেষ নাই। জনসাধারণের জন্য বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অনাকাক্সিক্ষত। তাই জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সেবা পেতে নাগরিকের ভোগান্তি এবং বিড়ম্বনা রোধ করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সনদসহ পৌরসভার নাগরিক সেবা পেতে কার্যকর ব্যবস্থা নেবার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী হয়রানির শিকার সাধারণ জনগণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, কয়েকদিন আগে দেশব্যাপী নানা আয়োজনে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত হলেও বাস্তবে ভুক্তভোগীদের ভোগান্তির সমাধানের কথা আলোচনা করা হয় না। অন্যদিকে পৌরসভার সেবা প্রদানকারীদের সীমাবদ্ধতা এবং সক্ষমতা জটিলতা সমাধানের কাক্সিক্ষত কোন পরিকল্পনা ছাড়াই আইন বহির্ভুত সেবা প্রদান করে দায়সার গোছের কর্মকান্ড পরিচালনা করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যা সময়ের প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্যহীন এবং দেশে কাক্সিক্ষত নাগরিক সেবা পেতে জন্মনিবন্ধন সনদ এখন অনেকটা বাধ্যতামূলক হলেও এই সেবা পেতে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। দোহাজারী পৌরসভা ২০১৭ সাল থেকে কার্যক্রম শুরুর ৫ বছর পার হয়ে গেলেও একটি কার্যকর জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সেবা প্রদান ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এই সেবা পেতে যে ভোগান্তি, সেটিই প্রমাণ করে, এ দেশে সরকারি দপ্তরগুলোতে সহজে কোনো সেবা পাওয়া যায় না। তাই এতে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন সময় দোহাজারী পৌরসভার নানান অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা প্রতিনিয়তই প্রকাশিত হলেও প্রতিকার নাই, যা খুবই দুঃখজনক। বর্তমানে ২০২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে মাধ্যমিকে ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন অত্যাবশ্যকীয় করা হয়েছে। কিন্তু জন্মনিবন্ধন সনদের জটিলতায় ২০২৩ সালে মাধ্যমিক স্তরে ভর্তির আবেদন করা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফলে শিক্ষার্থীদের ভর্তির আবেদন করা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সর্বোপরি পৌরসভাকে আদর্শিক পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রশাসককে নিয়মিত সময় দেওয়া। প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নাগরিক সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা দূর করা। যে সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারী সেবা গ্রহিতার নিকট ঘুষ দাবী ও হয়রানি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। পৌরসভাকে দালাল মুক্ত করা। ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করার ব্যবস্থা করা। দোহাজারীর ফুটপাত দখলমুক্ত করা, ময়লা আবর্জনা কাদা মুক্ত পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা, পৌরসভা থেকে অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে সেবা না দিয়ে আর্থিক মুক্তির স্বাধীনতা অর্জনে অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা আহ্বান করেন।