নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী গত শুক্রবার ২০ মে থেকে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ ও সুপারভাইজার কর্তৃক যাচাই কার্যক্রম পরবর্তী ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত অথবা শুরুর তারিখের পরবর্তী ৩ সপ্তাহ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ১৪০ উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ছবি তোলা ও ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম চলবে। অবশিষ্ট উপজেলাগুলোর জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্থানীয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন কার্যক্রমের সময়সূচি নির্ধারণ করবেন।
এবার ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা এর আগে যাদের জন্ম তাদের এবং বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন তাদেরও নিবন্ধনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
এরই আলোকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায়ও চলছে হালনাগাদ ভোটার কার্যক্রম। এই হালনাগাদ ভোটার কার্যক্রমে ইসি'র চাহিদা মতে জমির খতিয়ানে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিতে ভোটারদের উপচে পড়া ভিড় জমেছে ভূমি কার্যালয়ে।
এতে খতিয়ানে স্বাক্ষরের জন্য আসা নারী-পুরুষ ভোটারদের দীর্ঘ লাইনের দেখা মেলে। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে জমির খতিয়ান যাচাই-বাচাই করে এতো লোকজনের কাগজে স্বাক্ষর দিতে চরম ভাবে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ভূমি কর্মকর্তা।এমন কি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার কাছে খতিয়ানে স্বাক্ষর নিতে এসে গত দুইদিন চারটি জাল খতিয়ান সনাক্ত করেছেন। পরে স্ব স্ব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও স্বাক্ষরের জন্য ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় ও মুছলেখার মাধ্যমে তাদের সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে সূত্রে জানায়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার কার্যালয়ে খতিয়ানে স্বাক্ষর নিতে আসা ভোটার রেজাউল করিম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে খতিয়ানে স্বাক্ষরের জন্য ভূমি অফিসে আসলেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে দুপুরের পরে খতিয়ান পেয়েছি। খতিয়ানে স্বাক্ষর নিতে এতো বিড়ম্বনায় পড়তে হবে তা কখনও ভাবি নি।
একই ভাবে ইরফানুল হক বলেন, ভোটার হওয়ার জন্য এতো গুলো কাগজপত্র জোগাড় করা খুবই কষ্টদায়ক। এরই মাঝে খতিয়ানে ভূমি অফিসে স্বাক্ষর নিতে আসলে তাতেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। এরপরও কষ্টটা সার্থক।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রাহাত উজ জামান বলেন, বিগত দুইদিন ধরে ভূমি অফিসে এতো লোকজনের ভিড় আগে কখনও হয়নি। ভোটার হওয়ার জন্য যে ভাবে লোকজন খতিয়ানের কাগজপত্র নিয়ে আসতেছে তা যাচাই-বাচাই করা খুবই দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও মানুষের কষ্ট লাগবে যতদ্রুত সম্ভব জমির খতিয়ানপত্র সঠিক রয়েছে কিনা তা যাচাইয়ের মাধ্যমে স্বাক্ষর করে দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গত দুইদিনে খতিয়ান যাচাই-বাচাইকালে চারটি জাল খতিয়ান সনাক্ত করেছি। যারা ওইসব খতিয়ান নিয়ে স্বাক্ষর নিতে আসছিল তাদেরকে আটক করা হয়েছিল। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে যারা এসমস্ত জাল খতিয়ান নিয়ে ধরা পড়বে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।