আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
২টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম গেলো হেলিকপ্টারে

খাগড়াছড়িতে ভোটের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের বাকি আর মাত্র একদিন

মোবারক হোসেন, খাগড়াছড়ি: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৫ জানুয়ারী ২০২৪ ০৫:৩০:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

৭জানুয়ারি রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন। বিএনপি সহ সমমনা দল ও ইউপিডিএফ’র ভোট বর্জন এবং সরকার দলের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো নিয়ে যখন কাজ করছে, তখন নির্বাচনের বাকি আর মাত্র একদিন। খাগড়াছড়ির ২টি ভোট কেন্দ্রে হেলিকপ্টারে পাঠানো হলো নির্বাচনী সরঞ্জাম। ৫ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা সদর হ্যালিপ্যাড থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ভোটের নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়। একই সাথে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারসহ অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি পাঠানো হয়।  কেন্দ্র্র ২টি হলো লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নের ফুত্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটার সংখ্যা ১হাজার ৭৫জন। লক্ষ্মীছড়ি সদর ইউনিয়নের শুকনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটার সংখ্যা ১হাজার ৪৬জন। অপর দিকে দীঘিনালা থেকে একটি কেন্দ্রে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বাবুছড়া ইউনিয়নের নাড়াইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানোর কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহাকারি রিটার্নিং অফিসার মো: মামুনুর রশিদ। 

জানা যায়, খাগড়াছড়ির আসনে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জেলায় মোট ভোট কেন্দ্র ১৯৬টি। এসব কেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে ১৫টি, সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৮২টি এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৮৫টি কেন্দ্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

 

খাগড়াছড়ি আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি(নৌকা)জাতীয় পার্টির প্রার্থী মিথিলা রোয়াজা(লাঙ্গল) তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী উশ্যেপ্রু মারমা (সোনালী আঁশ) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো, মোস্তফা (আম প্রতীক)।

খাগড়াছড়ি আসনে বিএনপির পাশাপাশি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ ভোট বর্জন করতে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে গেলে জরিমানা গুনতে হবে এমন হুশিয়ারীও দেয়া হয়েছে। ফলে ভোট নিয়ে নানা শঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার লক্ষ্মীছড়িতে নৌকার প্রার্থী ও পানছড়িতে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী প্রচারণায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুটি হামলার ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপকে দায়ী করেছে। এদিকে সরকারি দল আওয়ামীলীগ বোটার উপস্থিতি বাড়ানোর আহবান জানিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম জানান, খাগড়াছড়ি একটি মাত্র আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪১৯ জন। তার মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫৩ হাজার ২৮৫ জন আর পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬২ হাজার ৬১। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুইজন। নতুন ভোটার ৭৩ হাজার ৬০৩ জন। খাগড়াছড়ি আসনের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক উপজাতি।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ভোটারদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার, লক্ষ্মীছড়ি ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ২টি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম বিশেষ ব্যবস্থায় হেলিকপ্টারে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হলো লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নের ফুত্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়নের শুকনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। 

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২১হাজার ১৮৫জন। এর মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৬৭৭জন, মহিলা ১০হাজার ৫০৮জন। লক্ষ্মীছড়ির অধিকাংশ কেন্দ্রই দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। সদও কেন্দ্রিক কিছু ভোট কেন্দ্র জীপগাড়ি ব্যবহার করতে পারলেও অনেকে কেন্দ্রে যেতে হবে পায়ে হেঁটে। 

এছাড়াও দূরবর্তী ও ঝুকিপূর্ণ ৫টি কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হবে ভোট গ্রহণের আগের দিন। বাকি ৭টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে ভোটের দিন সকালে। ২প্লাটুন বিজিবি, পুলিশের ৩ টি টহল টীম। এছাড়াও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান সুলতানা রাজিয়া।