রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের দৌছড়িতে পুলিশ ও প্রবাসী পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের ১ জন এএসআই,২ জন কনষ্টেবল,১ প্রবাসীসহ মোট ৮ জন আগত হয়েছে। আহতের অধিকাংশই ককসবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১ জন পুলিশ ও অপর ৩ জনের অবস্থা গুরুতর।
এ ঘটনায নামীয় ২৬ জন ও অজ্ঞাতনাম ১৫ জন মোট ৪১ জনকে আসামী করে রামু থানায় ১ টি মামলা মামলা হয়েছে। মামলার বাদী এসআই শরীফ উদ্দিন।
রামু থানা পুলিশ জানান,এ মামলায় ঘটনার প্রধান হোতা কচ্ছপিয়া যুবলীগের সভাপতি নজরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কোর্টে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশ,প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার ( ৯ মে) বিকেলে রোবহান উদ্দিন নামের ১ এক প্রবাসী তার প্রথম সন্তানকে দেখতে দুবাই থেকে দেশে ফিরে বাড়িতে রওয়ানা দেন। সে কচ্ছপিয়া গ্রামের সিকদার পরিবারের তাহের মেম্বারের ছেলে। এরই মধ্যে সে গোপনে খবর পান তার উপর কতিপয় দুষ্কৃতিকারী হামলা চালাতে উৎপেতে রয়েছে। যারা পারিবারিকভাবে তার প্রতিপক্ষ ছিলো। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে অবগত করালে পুলিশের সে এলাকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মাসুদ রানা দু'ছড়ি গ্রাম এলাকায় টহলে থাকা পুলিশ টিমকে বলে দেন,যেন সমূহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে ।
সূত্র মতে, এর মধ্যে প্রবাসী বুরহান উদ্দিন
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় তাড়াহুড়া করে বাড়ি ফিরছিলেন। সাথে তার মা সহ কয়েকজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সাথে ছিলেন।
তাদের গাড়ৃি দু'ছড়ি খালের ব্রীজের উত্তারংশে পৌঁছতেই একদল যুবক ও চিহ্নিত লোক এসে তাদের বহনকারী নোহা গাড়িতে হামলা শুরু করে। এক পর্যায়ে রেমিট্যান্স যোদ্ধা বুরহান উদ্দিনকে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে কুপাঁতে থাকে।
ঘটনার অদূরে অবস্থান করা পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসলে দুষ্কৃতকারীরা
পুলিশের উপরও শুরু করে হামলা।
বিষয়টি স্থানীয় গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ি জানতে পারলে ফাঁড়ির আইসি মাসুদ রানাসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছলে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। তারা ঘটনায় আহত পুলিশ ও প্রবাসীসহ অন্যান্যদের উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি ও ককসবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
একই সাথে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে
যু্বলীগ সভাপতি নজরুল ইসলামকে আটক করে।
গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সিনিয়র উপ-পরিদর্শক এসআই মোজাম্মেল হক জানান,যুবলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম ঘটনার মূল হোতা। ঘটনা চলাকালে লোকজনকে ডেকে ডেকে পুলিশের ওপর হামলার নির্দেশ দেন সে। যা ভিডিও ফুটেজে সংরক্ষিত রয়েছে তাদের কাছে।
এদিকে ঘটনায় আহতরা হলেন,গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শাহ পরান (৩৫),কনস্টেবল মোঃ আলী ( ২৮),কনস্টেবল ফজলু (৩২) প্রবাসী বুরহান উদ্দিন (২৭) তার মা হালিমা বেগম (৫০) রাশেদা বেগম শিউলী (৩০) নাহিদ (২৪) ও অপর জনের নাম জানা যায় নি।
রেমিট্যান্স যোদ্ধা আহত বুরহান উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন,বিয়ের কিছু দিন পর সে দুবাই চলে যায়। তার প্রথম সন্তান জন্মের খবর শুনে সে বাড়ি আসছিলো তাকে দেখার।
কিন্ত সে তার প্রিয় সন্তানের মূখটি এক নজর দেখতে পারে নি । নজু মেম্বার তার সে স্বপ্ন চুরমার করে দেয়। কিনা কারণে তার উপর হামলা করে নজুর সন্ত্রাসী বাহিনী।
যা অমানবিক। সে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার বিচার চায়।
এদিকে নজরুল ইসলাম মেম্বারের ঘনিষ্ট
আত্মীয় সরওয়ার কামাল ভূট্টু এ প্রতিবেদককে বলেন,মুল ঘটনা গরু পাচার নিয়ে। গত ১ সপ্তাহ ধরে এখানে গরু কাহিনী চলছিলো। এরই সুত্রপাত ধরে প্রবাসী বুরহান উদ্দিন ও তার পরিবারের সাথে স্থানীয় দু'ছড়ির গ্রামবাসীর ঘটনা হলে নজরুল মেম্বার তা
মধ্যস্থতা করতে গিয়ে দোষী হয়ে গেছে। আসলেও সে নির্দোষ।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আনোযারুল হোসাইন বলেন,ঘটনা ন্যাক্কারজনক। বিনা কারণে পুলিশের উপর হামলা মানে আইনকে অবজ্ঞা।
ঘটনার সরাসরি জড়িত থাকায় নজরুল ইসলাম নামের ১ জনকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে। বাকীদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য এ ঘটনার পর দু'ছড়ি ও কচ্ছপিয়া গ্রামে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
আর ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা- সমালোচনা চলছে। এ ঘটনায় বোরহান উদ্দিনের পরিবারও একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও তার পরিবার জানান। অবশ্য এর আগে পুলিশ বাদি হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেছেন।