আজ বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ই মাঘ ১৪৩১
বাদীর 'আপোষনামা'

ইউপি চেয়ারম্যানকে ছাড়াতে এলাকাবাসীর ঐক্যমত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফটিকছড়ি: | প্রকাশের সময় : সোমবার ২০ জানুয়ারী ২০২৫ ০৯:৪১:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

ফটিকছড়ি উপজেলা লেলাং ইউপি চেয়ারম্যান মো. সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীনের মুক্তির দাবী উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে তাঁর নিজ এলাকা। তাঁর বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন অব্যাহত রেখেছে এলাকাবাসী। তাঁকে ছাড়াতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে লেলাংয়ের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। 

 

মামলার বাদী হেফাজতকর্মী মো. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহীনের নাম বাদ দিতে আদালতে দিয়েছেন আপোষনামা। বিষয়টিকে ইতিবাচক দেখছেন হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। কিন্তু আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। ফলে নিম্ন আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হলে উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি চাইবেন বলে জানালেন তাঁর আইনজীবী আহমদ কবির করিম। 

 

আইনজীবী করিম বলেন, ‘গত ৯ জানুয়ারী আদালতে হাজির হয়ে চেয়ারম্যানের জামিন আবেদন করলে এডিশনাল চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম সরওয়ার জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। ফলে পরবর্তিত ধার্য্য ২২ জানুয়ারী পূণরায় তাঁর জামিনের আবেদন করা হবে। সেদিনও জামিন নাহলে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।’

 

ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলায় এলাকার জনদরদী শাহীন চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এটি একটি বড় চক্রান্ত। তাঁকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এলাকায় আন্দোলন চলবে।

 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. শেফায়াতুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘শাহীন চেয়ারম্যান একজন মানবিক জনপ্রতিনিধি। তিনি দলমতের উর্দ্ধে উঠে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। যে কোন দূর্যোগ ও মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে ছুটে গেছেন এবং অসহায়দের অকাতরে দান করেছেন। তাঁর এই গ্রেফতার আমাদের ব্যতীত করেছে। এটি চরম অন্যায়।’

 

রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা এম হোসাইন বলেন, ‘পুরো ইউনিয়নকে তিনি মেধা, মনন ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে গড়েছেন এক উজ্জ্বল অধ্যায়ে। গরীব মানুষের পাশে থেকে তিনি সব সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবায় বিশেষ অবদান, সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। এটিই তাঁর জন্য কাল হয়েছে। '

 

এদিকে, মামলার বাদী আদালতে আপোষ দেওয়ায় বিষয়টিকে ইতিবাচক মনে করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর শাহ্ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি সুপারিশ করে বলেন, ‘চেয়ারম্যান একজন ভাল মানুষ। দীর্ঘকাল থেকে তিনি সংগঠন ও বিভিন্ন দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে অকাতরে দান করেছেন। হেফাজতের বিভিন্ন প্রয়োজনেও হাত বাড়িয়েছেন। বাদী আপোষ দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।’

 

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘মামলায় এজাহারভূক্ত বলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কে অপরাধী আর কে নিরাপরাধী সেটি দেখার এখতিয়ার বিজ্ঞ আদালতের। বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির পরামর্শ দেন তিনি।’

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় হেফাজত অধ্যুষিত মাদ্রাসার ছাত্রহত্যা মামলায় গত ৮ জানুয়ারী ফটিকছড়ির লেলাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীনকে চট্টগ্রাম নগরী থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর থেকে বিক্ষিপ্তভাবে তাঁর মুক্তির দাবীতে আন্দোলন, বিক্ষোভ-সংগ্রাম ও মানববন্ধন অব্যাহত আছে।