আনোয়ারায় পারিবারিক ভূমি বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করতে গিয়ে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে অভিযুক্তকে উলঙ্গ করে মারধর ও মহিলাদের হেনস্তের একটি ভিডিও গত দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম(ফেইস বুকে) ভাইরাল হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুরে উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সাপমারা এলাকায় এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সমলোচনার ঝড় উঠে। তবে থানা পুলিশ বলছে মামলার আসামী ধরতে গেলে তারা পুলিশের উপর হামলা করেছে।
এঘটনায় পুলিশের উপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ এনে থানা পুলিশের এসআই মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ১১ জনকে আসামী করে মামলা করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, বাড়ীর নারী-পুরুষদের সাথে পুলিশের মহিলা ও পুরুষ সদস্যরা ধস্তাধস্তি করছে। এসময় একজকে উলঙ্গ অবস্থাও দেখা যায়। এতে সিভিল পোশাকে পুলিশ সদস্যও রয়েছে বলে জানাযায়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় উঠে।
ঘটনার সাথে জড়িত নুরুল আমিন বলেন, আমার সৎ ভাই আবুল কালামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। তার ছেলে মোহাম্মদ বশির পুলিশের চাকরি করার সুবাধে প্রায় সময় আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখায়। ঘটনার দিন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আনোয়ারা থানা পুলিশের পুরুষ সদস্য দিয়ে ঘরের নারীদেরও হেনেস্তা করে। এসময় আমার ভাই নুর মোহাম্মদকে উলঙ্গ করে বেধড় পেঠায়। যা ভিডিওতেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। পরে মিমাংসার কথা বলে থানায় নিয়ে গিয়ে আমার বোনদেরকেও আটক করে মামলা দেয় পুলিশ। আর এসব কিছু আবুল কালামের ছেলে এসআই বশিরের কথামতো করছে। বশির চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং থানায় পুলিশের উপ পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
আনোয়ারা বেগমের ছেলে হারুন উর রশীদ জানান, আমাদের ঘরে আমার মা ছাড়া কেউ নাই । আমরা সকলে প্রবাসে থাকি। আমার নানার বাড়ির ‘আবুল কালামের ছেলে পুলিশের চাকরি হওয়ার পর থেকে নির্যাতনের মাত্রা যেন বাড়িয়ে দিয়েছে আমার মামাদের উপর। ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পুলিশ দিয়ে ঘরের নারীদের হেনেন্তা করে বৃহস্পতিবারে। এসময় আমার মামা নুর মোহাম্মদকে উলঙ্গ করে মারধর করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনারপর আমার মা (আনোয়ারা বেগম) তার ভাইকে দেখতে থানায় গেলে আমার মাকেও আটক করে পরদিন শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। প্রশাসনকে সুষ্ঠু তদন্ত করার অনুরোদ জানাচ্ছি।
তবে আবুল কালামের ছেলে ও পুলিশের এসআই বশিরুজ্জামান বশির এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এসব ঘটনা কিছুই জানি না। আমি শহরে কর্মস্থলে আছি।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে মামলা হওয়ার পর মামলার আসামীদের ধরতে যায় পুলিশ। এসময় অভিযুক্তরা পুলিশের উপর হামলা করে। এঘটনায় নারী পুলিশসহ আহত হয়েছে ৪ পুলিশ সদস্য। পুলিশ বাদী হয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার ৪ আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।