উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ছয় বাংলাদেশি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। বন্যায় দেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহর দেরনায় আরও কিছুসংখ্যক বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলে গত সোমবার আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হয় এবং বৃষ্টির পানির চাপে দেরনা শহরের কাছে নদীর ওপর দেওয়া দুটি বাধ ধসে পড়ে। মূলত সেই বাঁধের পানির কারণে সেখানে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় কর্মকর্তারা বলছেন, বন্যায় এখন পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে। শহরের হাসপাতালের একজন পরিচালক রয়টার্সকে জানান, তার হাসপাতালে ১৭০০ মরদেহ গণনা করা হয়েছে এবং আরও ৫০০ জনকে শহরের অন্য অংশে দাফন
বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে দেরনা শহরে বসবাসরত ৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের মধ্যে ৪ জনের প্রাথমিক পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন রাজবাড়ি জেলার শাহীন ও সুজন এবং নারায়ণগঞ্জের মামুন ও শিহাব।
তবে দূতাবাসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বাকি দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া দেরনা শহরে বসবাসরত আরও কিছুসংখ্যক বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দূতাবাস।
দূতাবাস বলছে, লিবিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকসহ সকলের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার তাণ্ডবে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে দেরনা, সাহাত, আল-বাইদা, আল-মার্জ শহর ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে দেরনা বাঁধে ভয়াবহ ধসে সৃষ্ট বন্যায় কয়েক হাজার মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
দেরনা শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ উদ্ধার কার্যক্রমে নিয়োজিত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলে দূতাবাস জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের তথ্য জানতে এবং ঘূর্ণিঝড়ে নিখোঁজ প্রবাসীদের তথ্য জানানোর জন্য দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়ার (মোবাইল নম্বরঃ +২১৮৯১৮৫৮০৯৮৯) সাথে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।