আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রামুর কচ্ছপিয়ায় কৃষক মুক্তারকে বন্দুকের বাটের আঘাতে খুন করে ঘাতকর

মোঃ ইফসান খান ইমন, নাইক্ষ‍্যংছড়ি: | প্রকাশের সময় : সোমবার ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:০৭:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

কৃষি কাজই ছিলো তার একমাত্র পেশা।

৬ সন্তানকে নিয়ে সূখে ছিলেন তিনি। ধান চাষ,শীতকালীন সবজি ও তামাক চাষই জীবন-জীবিকার একামাত্র উৎস তার। জীবনের শেষ মূহুর্তে 

সেই ধান আর তামাক বিক্রির টাকাই  কাল হলো তার। সে দিন

সন্ধ্যা পেরিয়ে সোয়া ৭ টায় টুপি পড়া সেই ৬২ বছর বয়সী এ বৃদ্ধা মুক্তার আহমদের প্রাণ কেড়ে নিলো ঘাতকরা বন্দুকের বাটের উপর্যপুরি  আঘাতে। গুরুতর আহত মৃতের সন্তান  মনির উদ্দিনও হাসপাতাল বেড়ে পাঞ্জা লড়ছে মৃত্যুর সাথে। এছাড়া ঘাতকদের হামলায় মুক্তারের পরিবারের সকলেই কম-বেশী আহত হন সে দিন।  এমতাবস্থায় সোমবার পযর্ন্ত এ ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও থামে নি পরিবারের  কান্না। সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে শাহিনা ও তার মা খদিজা বারবার মূর্চা যাচ্ছিলো সোমবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদক  সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনার মূল ঘাতকদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ,অভিযোগ পরিবারের।

মামলার বাদি জসিম উদ্দিন,প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানান,ঘটনাটি ঘটে ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর

ওয়ার্ড়ের নতুন পাড়া খুন হওয়া মুক্তার আহমদের নিজের বাড়ি আঙ্গিনায়। আর রামু থানায় মামলা হয় ২২ ডিসেস্বর রাতে। এরই মধ্যে এজাহার নামীয় ১৩ আসামীর মধ্যে ২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও মূল ঘাতকদের হদিস পাচ্ছে না পুলিশ।

অথচ তারা এলাকায় ঘুরেফিরে আত্মগোপনে সব তৎপরতা চালাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শফিকুল ইসলাম ও মনির উদ্দিন জানান,ঘটনার সূত্রপাত বার্মিজ ৩ চোরাই গরুর ১ টি বিষয় নিয়ে। ঘতক চক্র  স্থানীয় ইউনুছ ও কামাল নামের ২ জনের ৩ টি বার্মিজ গরু দস্যুতা করে লুকিয়ে রাখে মুক্তারদের বাড়ির অদূরে। পরে গরু গুলো মালিক এসে নিয়ে গেলে এ ঘটনায় দোষ দেয়া হয় মুক্তার ও তার ছেলে মনিরের উপর। আর এই ৩ টি গরুর মূল্য ৫ লাখ টাকা হিসেব করে মুক্তারকে পরিশোধ করতে বলে। যদিও মুক্তার এসব 

ঘটনাকে অস্বীকার করে আসছিলো। সেই

গরুর মালিক দাবিদার রাশেল,সোহেলসহ চক্রটি মুক্তার ও তার পুত্র মনিরের পিছু ছাড়ছিলো না। 

তারা আরো বলেন, ঘটনার দিন ঘাতকরা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পরপর নিহত মুক্তার আহমদের  ঘর ঘিরে রাখে। তখন কৃষক মুক্তার আহমদ (৬২) স্থানীয় বাজার থেকে ধান বিক্রি ও ধার করা ১ লাখ ২ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ঘাতকরা সোর্স লাগিয়ে তাকে অনুসরণ করছিলো। আর কখন বাড়ি ফিরে নিশ্চিত করছিলো বারবার স্থানীয় মোহাম্মদ শফি নামের ১ যুবককে ফোন করে। 

তারা আরো জানান,ঘতকরা ফিল্মিস্টাইলে স্থানীয় ৩ চা দোকানীর টিভির সাউন্ড বড় করে দিয়ে মসজিদে এশার নামাজের জামাত শুরুর সাথে সাথে  হামলা শুরু করে মুক্তার পরিবারের উপর । প্রথমে টাকা কেড়ে নিতে চেষ্ঠা করা হয়। বাঁধা পেয়ে ১ রাউন্ড গুলি করে 

ঘাতকদল। 

তারা জানান,স্থানীয় পাহাড়ী সন্ত্রাসী গ্রুপ

লিডার ও বার্মিজ গরু দস্যু রাশেল,সোহেল,লেইট্টা,তাহের,মহিউদ্দিন সহ ১৩/১৪ জন স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী সে দিন পুরো গ্রামে রাম রাজত্ব কায়েম করে।

এর পর শুরু করে হামলা। 

 

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আলম,নজির হোসেন,নজির আহমদ,খদিজা বেগম জানান,ঘাতকরা গত ১ বছর ধরে পাহাড়ি এ গ্রামে ঘোরাঘুরি করে আসছিল। তাদের আলাদা পোষাক রয়েছে। আশপাশের ৫ গ্রামে তারা ঘুরে বেড়ায়।  সন্ধ্যা নামলেই তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে বীর বেশে ঘুরে- ফিরে। যাদের প্রধান রাশেল নামের এক যুবক। তার হাত নাকি অনেক লম্বা। তার অনেক মামলাও রয়েছে। এ বিষয়ে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আবু তাহের দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে,তিনি বলেন ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকিদেরও  আটকের জ‍ন‍্য চেষ্টা  অব্যাহত আছে।

এ সব লোকসহ গ্রামবাসী এ রাশেল বাহিনীর প্রধান রাশেলসহ তার বাহিনীর সকলকে গ্রেপ্তার পূর্বক কঠোর শাস্তি দাবী জানান।