বান্দরবান সদর থেকে রুমা উপজেলায় যাওয়ার পথে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার সড়কে ৪৬টি বেইলি ব্রীজ মৃত্যু ফাঁদে পরিনত হয়েছে। আশির দশকে নির্মান করা এই বেইলি ব্রীজ গুলো জোড়া তালি দিয়ে মেরামত ও ঘসা মাজা করে গাড়ী চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা চালালেও যে লাউ সেই কদু। কখনো ব্রীজ ভেঙ্গে বা কখনো পাটাতন খুলে ঘটছে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা। ফলে বান্দরবান সদর- রুমা সড়কে চলাচলকারী মালামাল ও যাত্রীবাহী গাড়ি এবং মোটরসাইকেল প্রতি নিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
জানা যায়, বান্দরবান থেকে রুমা উপজেলায় এক সময় মানুষ সাঙ্গু নদী পথে নৌকা যোগে যাতায়াত করতো। আশির দশকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ স্থল পথে গাড়ি যোগাযোগের জন্য রাস্তা নির্মানের সময় বিভিন্ন খাল ও ঝিরিতে প্রায় ৬৭টি বেইলি ব্রীজ নির্মান করে। রুমা উপজেলায় প্রায় বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। প্রতি নিয়ত বাড়ছে ব্যবসায়ীক ক্ষেত্র। এছাড়াও রুমা উপজেলায় অবস্থিত দেশের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। গড়ে উঠেছে রিজুক ঝর্নাসহ অসংখ্য পর্যটন স্পর্ট। নিরাপত্তার দায়ীত্বে রয়েছে পুলিশ,সেনা বাহিনী ও বিজিবি। বলতে গেলে রুমা উপজেলায় প্রতি নিয়ত বাড়ছে মানুষের চাপ। তার সাথে তালা মিলিয়ে রাস্তার উপর পড়ছে যান বাহনের চাপ। এভাবে ক্রমান্বয়ে ঝুঁকি পুর্ন হয়ে উঠেছে ৪৬টি ব্রীজ। প্রায় সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন এবং সেনা বাহিনীর লোকজন ওয়েল্ডিং দিয়ে ক্ষনস্থায়ী মেরামতের মধ্যমে ব্রীজ গুলো গাড়ি চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা চালাতে দেখা যায়। ব্রীজের ক্ষয় ক্ষতি এড়াতে ৩টনের অধিক ভারী মালামাল বাহী গাড়ি চলাচলে সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রায় সময় বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। টেকসই ও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ধিরে ধিরে বেইলি ব্রীজ গুলো ঝুঁকি পুর্ন হয়ে পড়েছে। যার ফল প্রতি নিয়ত যাত্রী ও মালবাহি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ক্ষয় ক্ষতি ও প্রাণহানীর ঘটনা ঘটছে। গত ২রা ফেব্রুয়ারী মুরুং বাজার এলাকায় ব্রেইলী ব্রীজ ভেঙ্গে চাউল ভর্তি ট্রাক খাদে পড়ে আব্দুল গফুর নামে এক চালক নিহত হয়েছে।এঘটনায় বান্দরবানের সাথে রুমার সড়ক যোগাযোগ প্রায় ৫দিন বিচ্ছিন্ন ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দু’পাড়ের অসংখ্য মানুষ। সোমবার সকাল মুরং বাজার এলাকায় আরো একটি মালামাল বাহী গাড়ি উল্টে ৩জন আহত হয়।
এবিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি বলেছেন,বান্দরবান সদর-রুমা সড়কের ৪৬টি বেইলি ব্রীজ অত্যন্ত ঝুর্কি পুর্ন হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ বছর আগে নির্মিত ঝুঁকি পুর্ন এসব ব্রীজের কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষে জান ও মাল আজ হুমকির মুখে। দ্রুত এসব ঝুঁকি পুর্ন ব্রীজের কোন টেকসই সামাধান না হলে ক্ষয় ক্ষতি ও হতাহতের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অবিলম্বে মানুষের জান ও মাল হেফাজতে সকল ঝুঁকি পুর্ন ব্রীজ আপসারন করে নতুন ব্রীজ নির্মান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষন করেন।
বান্দরবান সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোছলেহ উদ্দিন বলেন, ২রা ফেব্রুয়ারী রুমায় যাওয়ার সময় মুরুং বাজার এলাকায় একটি ট্রাক বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে নিচে পড়ে যায়। এসময় চালক নিহত হয়। এঘটনায় বেশ কয়েক দিন বান্দরবানের সাথে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এসড়কে ঝুঁকি পুর্ন বেইলি ব্রীজের কারনে প্রায় সময় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। ঝুঁকি পুর্ন ব্রীজ গুলো চিহ্নিত করে নতুন গার্ডার ব্রীজ নির্মান করতে চাহিদা পত্র মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।