সম্প্রতি আট দিনের টানা অতিবর্ষণে বান্দরবানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে জেলার অধিকাংশ সরকারি অফিস, বসতবাড়ি ও অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট। বন্যায় জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতাধীন ৯০০ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার খানসামা-বাঘমারা সড়ক, হলুদিয়া-ভাগ্যকুল সড়ক, থানচি-বলিপাড়া, রুমা-পলিকা পাড়া সড়ক, আলীকদম-দোছড়ি সড়ক, নাইক্ষ্যংছড়ি-আলীকদম সড়ক, নাইক্ষ্যংছড়ি-তুমব্রু ডিসি সড়ক, লামা-সুয়ালক সড়ক, আজিজনগর সড়ক, ফাইতং সড়ক, কালাঘাটা-তাড়াছা সড়ক, রোয়াংছড়ি-লিরাগাঁও সড়কসহ জেলায় মোট সড়ক রয়েছে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার। সম্প্রতি অতিবর্ষণে এগুলোর প্রায় ৩০০ কিলোমিটার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা সংস্কার করতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হবে। এছাড়া এলজিইডির অফিস ও অফিসের সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অফিসের সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ মেরামত করতে আরও প্রায় ২০ লাখ টাকার ওপরে লাগতে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এলজিইডির অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বেশির ভাগ স্থানে নিচের মাটি সরে গিয়ে ধসে গেছে। কোথাও কোথাও পাহাড় ধসে পড়ে রাস্তার অর্ধেক অংশ ভেঙে গেছে। এসব সড়ক যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ভোগান্তিতে পড়েছে এসব সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের মতে, এসব সড়কের বেশিরভাগই যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। কিছু কিছু সড়কে যানচলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এগুলো দ্রুত মেরামত করা না গেলে যানচলাচলের সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ট্রাকচালক মো. ইব্রাহিম বলেন, এবছর বান্দরবানের এলজিইডির সড়কগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো মেরামত না করা হলে আমাদের গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক কষ্টে গাড়ি চালাচ্ছি।
জাকির হোসেন বলেন, রাস্তাগুলো এমনভাবে ভেঙেছে যে এসব সড়কে হাঁটাও কষ্টকর। আমরা দ্রুত এসব সড়ক সংস্কার চাই।
দ্রুত সড়কগুলো সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন বান্দরবান এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জিয়াউল ইসলাম মজুমদার। তিনি বলেন, বান্দরবানে অতিবর্ষণে প্লাবিত হয়ে ও সড়কের মাটি সরে গিয়ে ৯০০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এসব সড়ক মেরামতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ হবে। এছাড়া অফিসের সরঞ্জামের পেছনে আরও ২০ লাখ টাকার বেশি ব্যয় হবে। আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করবো।