আজ রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পাহাড়ে জুমের পাকা ধান কাটার শুরু

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৫২:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের মধ্যে পাহাড়ের ঢালে জংগল কেটে এক প্রকার চাষাবাদ করা পদ্ধতিই হল জুম চাষ। জুমের ধান পাকার কারনে পাহাড়ের এখন নতুন ধান কাটার শুরু হয়েছে।

 

পার্বত্য অঞ্চলে আগেকার তুলনায় জুম চাষ অনেকাংশে কমে আসলেও এখনো প্রায় ৬০ শতাংশ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমির অভাবে অনেক ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে জুম চাষের উপর নির্ভরশীল হতে হয় এখানকার জনগোষ্ঠীদের। এসময় পাহাড়ে বেশিরভাগ জুমের ধান পেকে যাওয়ায় কৃষকেরা পাকা ধান কেটে ফসল সংগ্রহ করা শুরু করেছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়নের কমলা বাগান পাড়ার মিলন ত্রিপুরা জুমের ৯/১০ জন নারী পুরুষ মিলে পাকা ধান কাটার শুরু করেছে। এসময় তিনি বলেন, ১০ হাড়ি পরিমান ধান জুমে লাগানো হয়েছে। জুমের পাকা ধানগুলো আজকের প্রথমবার ধান কাটতে শুরু করেছি। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে সময়মত ধান কাটতে না পারায় পাকা ধান কিছু অংশ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ফলন কম পাবেন বলে ব্যক্ত করেন তিনি। একই ভাবে পাড়ায় ফিলিপ ত্রিপুরা ও মুংগহা ত্রিপুরাদের জুমের ধান কাটতে শুরু করেছে। 

 

পাহাড়ে ধান ছাড়াও জুমের তিল, ভূট্টা, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, বেগুন, টক পাতা, ও হলুদসহ বিভিন্ন ফসলের মিশ্রনে চাষ করা হয়। এছাড়া জুমের বিভিন্ন রঙের গাঁদা ফুলের চাষ করা হতো। ধান কাটার শেষে গৃহিণীরা যখন বিভিন্ন তরী তরকারি আনতে জুমে যায় তখন গাঁদা ফুল মাথায় দিয়ে বাড়িতে ফিরতো। বছর শেষে যখন ঘরে ও পাড়ায় পূজা পার্বণ হতো তখনও গাঁদা ফুলের সাজানো হতো। জুম চাষ পাহাড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভূমিকা পালন করে।

 

উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী ও উদ্ভিদ উদ্যান সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাস গুপ্ত জানান, উপজেলায় ২৪১৩ হেক্টর জায়গার উপর ২৬৫৭ জন জুমিয়া জুম চাষ করে থাকেন। এবছর উপাদানের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০১০ মেট্রিক টন (চাউল)। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকের উপর নানান কর্মসূচির ও পরামর্শের ফলে গতবছরের তূলনায় পাহাড়ের এবছর চাষাবাদ ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি। কৃষকেরা জুমের পাকা ধান কাটার শুরু করেছে, ফসল সংগ্রহের কাজ চলবে অক্টোবর মাস পর্যন্ত।