বান্দরবানে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে রাতের আঁধারে ভরাট করা হচ্ছে জলাশয়। পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় জলাশয় ভরাট করে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবান পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সেনা রিজিয়নের পার্শ্ববর্তী সেগুনবাগিচা এলাকার জলাশয়টি মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। জলাশয়ের পশ্চিম, উত্তর এবং পূর্ব দিকে একাধিক স্থানে টিন ও পলিথিন দিয়ে ঘিরে মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। কৌশলে বাঁশ-কাঠের খুঁটি দিয়ে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি কাঁচা দোকানঘরও তৈরি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, জলাশয়ের জায়গাটি মূলত সড়ক ও জনপথ বিভাগের। এছাড়া সরকারি কিছু খাস জমিও রয়েছে সেখানে। কিন্তু প্রভাবশালী মনির চৌধুরী পরিবারের পাহাড়ি জমি রয়েছে সেগুনবাগিচা এলাকায়। জমিজমা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধও চলমান রয়েছে।
তারা আরও বলেন, জলাশয়টি এক সময় বালাঘাটা এবং রোয়াংছড়ি স্টেশনগামী মানুষের গোসলের অন্যতম পানির উৎস ছিল। কিন্তু আশপাশের দখলবাজদের অত্যাচারে জলাশয়টি বিলীন হতে চলেছে। চারপাশ দখল করে ছোট থেকে ছোটতর হচ্ছে। কচুরিপানা আর ময়লা আবর্জনায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মূলত মনির চৌধুরীকে ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল জলাশয়টি ভরাটের মাধ্যমে সরকারি জায়গা দখলের পাঁয়তারা করছে। মনির চৌধুরী নিজেই সরকারি খাস জমি এবং বিরোধ সংক্রান্ত জমি বিক্রি করে ফায়দা লুটতে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে জলাশয় ভরাটের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। বালাঘাটা এমডিএস এলাকায় বসতি নির্মাণের জন্য রাতে এক্সকেভেটর দিয়ে পাহাড় থেকে মাটি কেটে ট্রাকযোগে এনে জলাশয়টি ভরাট করা হচ্ছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মনির চৌধুরী বলেন, আমি কোনো ধরনের পাহাড় কাটছি না। জলাশয় ভরাটের কাজও করছি না। জলাশয়ের জায়গাটি আমাদের, দোকানঘর ভেঙে যাওয়ায় শুধু মাটি ফেলে দোকানটি ঠিক করা হচ্ছে। এদিকে সরকারি জায়গা দখল করে জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুচ সালাম বলেন, জলাশয় ভরাট করা পরিবেশ আইন বিরোধী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেগুনবাগিচা এলাকায় পাহাড় কাটা মাটি ফেলে জলাশয় ভরাটের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।