আজ সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নি:স্ব-নির্বাক নাইক্ষ্যংছড়ির এক কৃষক,৪০ বছরের ধানি জমি কেড়ে নিল এক প্রভাবশালী

মোঃ ইফসান খান ইমন, নাইক্ষ‍্যংছড়ি: | প্রকাশের সময় : সোমবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:০৩:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

৪০ বছরের চাষের জমি হারিয়ে নি:স্ব-নির্বাক নাইক্ষ্যংছড়ির এক কৃষক।তার নাম মোহাম্মদ হোসেন। তার বাড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের বাহিরমাঠ ৮ নম্বর ওয়ার্ড়ে। তিনি ৫ সন্তান  ও ১ স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন পিতার ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ভিটায়। আর ভিটার পাশের জঙ্গলাকীর্ণ পরিত্যক্ত ও পাহাড়ি টিলার পাশ কেটে  চাষের জমি আবাদ করে সে। আর সে কষ্টের জমিতে চাষ দিয়ে সংসারের হাল টানেন সারা বছর । এভাবে দীর্ঘ ৪০ বছর জীবন নির্বাহ করে আসছিলো সূখে-শান্তিতে। 

এখন সে সূখ কেড়ে নেয় তার বড়ভাইয়ের তিন ছেলে (ভাইপো)। তারা গত ৩১ আগষ্ট সকালে তার চাষের সেই দেড় কানি জমি কেড়ে নেয় তারপর  মারধর করে।

শুধু তাই-নয় খাবার পানির কলটা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় ভাইপোরা। এখন চরম কষ্টে দিন যাপন করছে তার পুরো পরিবার। এভাবে অভিযোগ গুলো তুলে ধরেন এলাকার শান্ত-শিষ্ট ও গরীব কৃষক সেই মোহম্মদ হোসেন।

তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন,ঘটনার দিন তার ৩ ভাইপো এক প্রভাবশালীসহ ১৫/২০জন উগ্র-বখাটেকে সাথে নিয়ে জমি দখলে এসে তাকে খোঁজে প্রথমে। তাদের প্রত্যেকের  হাতে থাকা রাম দা,লোহার রড়,লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করে প্রথমে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রতিবাদ করায় এ সব পুরুষ অস্ত্রবাজরা তার ( মোহাম্মদ হোসেনের) মেয়ে, স্ত্রী ও অন্যান্য মেয়েদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে আহত হয় সকলে। পরে এ ঘটনায়  মামলা হয় বান্দরবান কোর্টে । তার বার্ধক্যতার কারণে 

মামলার বাদী করা হয় তার মেয়ে ফাতেমা বেগমকে।  সেদিনের ঘটনায় ফাতেমা বেগমও গুরুতর আহত  হয়। ফাতেমা বেগম স্থানীয় এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণির ছাত্রী। 

মামলায় ফাতেমা বেগম উল্লেখ করেন,সেদিন আবদুল গনি,ওসমান গণি,আবদুল মান্নান ও মোহাম্মদ হাশেমগং  তার পিতার নামীয় দোছড়ি মৌজার আর/১৫০ নং হোল্ডিং এর জমিতে অনুপ্রবেশ করে জোরপূর্বক ধানের চারা রোপণের চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিলে তারা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

ফাতেমা, তার মা-ভাগিনী ও বোনদের উপর। এতে আহত হয় সে নিজে,তার মা মাহমুদা খাতুন ( ৫২), বোন ইসলাম খাতুন,ছৈয়দা খাতুন, মাইমুনা আক্তার বিলকিছ। যাদেরকে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে পরে রামু চাবাগান হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসা করা হয়। এখনও তাদের চিকিৎসা চলছে। 

ফাতেমা বেগম আরো বলেন,আসামীরা জামিনে এসে তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। 

তারা খুবই অসহায়। তার পুরো পরিবার আসামীদের কঠোর শাস্তি দাবী জানান। পাশাপাশি তাদের হারানো জমি ফেরৎ চায়। 

এদিকে পাড়ার সরদার মকবুল হোসেন,(৭৬),মুরব্বি আবদুচ্ছালাম( ৬৮) ও আবদুল কাদের(৭৪)সহ অনেক এ প্রতিবেদককে বলেন,সুলতান ও মোহাম্মদ হোসেন ২ ভাই। তাদের পিতা মোহাম্মদ ইসমাঈল। তিনি মারা যান ১৯৮৫ সালে। 

পিতার ভাগবন্টন মতে এবং পিতার মৃত্যর পর থেকে অদ্যবদি এ জমির ভোগদখলে মোহাম্মদ হোসেন। হঠাৎ করে রাঠি-সোঠা নিয়ে জমি কেড়ে নেয়া মানে দেশের আইন না মানা। দলিল-পত্র থাকলে কোর্টের মাধ্যমে নিতে পারতো। 

এখন কাগজ নেই তাই জোরকরে গরীবের হক কেড়ে নিলে ভাইপোরা।

এদিকে জমি দখল ও মারধর বিষয়ে প্রতিপক্ষের প্রতিনিধি মৃত সুলতানের ছেলে আবদুল গণি তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বিরুধীয় সে জমি তাদের চাচার দখলে ছিলো আনুমানিক বিশ বছর। 

কিন্তু কাগজ পত্র সব তার পিতার নামে।

সে কারণে তারা এ জমিতে গেছেন।