বান্দরবানে রোয়াংছড়িতে মুনথার পাড়ার প্রবীণতম ব্যক্তি জুয়ামবিল বুইতিং ১০১বছর বয়সে মারা গেছেন। রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের মুনথার পাড়া নিজ বাড়িতে গতকাল শুক্রবার সকালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ শনিবার সন্ধ্যা বাড়ির উঠানে তাকে খ্রীষ্টান ধর্ম উপাধিতে মযার্দা দিয়ে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি প্রতিনিধি ও রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামিলীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি নেইতং বুইতিং পিতার জুয়ামবিল বুইতিংকে।
তিনি রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের সাইরু (বর্তমানে লুংলাই) পাড়াতে ১৫ অক্টোবর ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করে ১৯৪৬ সালে লেখা পড়া শুরু করেন চুরাচান পুর মিশন স্কুলের (ভারত) থেকে ৭ম শ্রেণী পাশ করে ২৮ ডিসেম্বর ১৯৫৬খ্রি. তারিখে ৩৫ বছর বয়সে বিবাহ করে সংসার জীবনে অধিষ্ঠিত হন। পরে ১৯৫৭ সালে আবার ৮ম শ্রেণীতে লেখা পড়া করে পাশ করে চলে আসেন।
জুয়ামবিল বুইতিং ৭ জন পুত্র সন্তান, ৫ জন কন্যা সন্তান মোট ১২ জন ছেলেমেয়ে ও ৩২ জন নাতি নাতনী রেখে গেছেন। প্রয়াতের বড় ছেলে বি,টি থ্লাংদির বুইতিং প্রাইমারি স্কুলে অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান সকল ভাই বোনদের সবাই বেচে আছে বম সম্প্রদায়ের মধ্যে সবোর্চ্চ শিখিত বুইতিং পরিবারের গ্রেজুয়েট ৪ জন ও নাত্নী ২জন, নাতি মাস্টার্স পাশ ৫জন রয়েছেন। তার মধ্যে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১জন, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১জন, বাইবেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রিন্সিপাল ১জন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ২জন, সরকারি স্টাফ নার্স ২জন, নাতী রুয়াল থাং লিয়ান বুইতিং জেরী রোয়াংছড়ি কলেজ প্রিন্সিপাল কর্মরত আছেন।
তিনি ১৯৫৮-১৯৬২ খ্রি. সাল পযর্ন্ত শিক্ষকতা করেছিলেন । বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা স্বাক্ষরিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থেকে ১৬ নভেম্বর ২০১৮ সালে বম লোক সংগীতে অসমান্য অবদান স্বীকৃতি স্বরুপ আজীবন সম্মাননা সনদ প্রাপ্ত হয়েছেন। পরিবারে বিবাহ ৫০ বছর পূর্তি ১৯৫৬-২০০৬ খ্রি. ৬০ বছর পূর্তি ১৯৫৬-২০১৬ খ্রি ও বয়স ১০০ বছর পূর্তি ১৫ অক্টোবর ২০২১ ইং সালে ১২জন পুত্র-কন্যা সন্তান ও ৩২জন নাতি-নাত্নীসহ এলাকার সকলে মিলে বড় অনুষ্ঠান উদযাপন পালন করেছিলেন।
এদিকে বম সম্প্রদায়ের প্রবীণ ব্যক্তি হওয়ায় জুয়ামবিল বুইতিং মৃত্যুতে স্থানীয়দের শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুতে পরিবারের নাতি-নাতনি, এলাকার গণ্যমান্য শোক প্রকাশ করেছেন।