ককসবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া বড়বিলের একটি মাদরাসা দখলে নিতে মরিয়া ৪ ছোট ভাই। তাদের রোষানলে পড়ে এখন অনেকটা হতাশায় নিমজ্জিত বড় ভাই আলহাজ্ব মৌলানা মাহমদুল হাসান। যিনি মরহুম মৌলানা নজির আহমদের প্রথম প্রথম সন্তান।
এ ব্যক্তি রাত দিন পরিশ্রমের মাধ্যমে ছাত্র সংগ্রহ করে গর্জনিয়া বড়বিল আল নজির নূরানী একাডেমি নামের মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন সকলের সহযোগীতায়। প্রতিষ্ঠার পর এ মাদরাসার অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করতে তিনি শ্রম,মেধা,অর্থসহ সব কিছু উজাড় করে দেন। প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পর এসে তার ছোট ভাইয়েরা ইর্ষান্বিত হয়ে তাকে মাদরাসা থেকে বিতাড়িত করতে চান অপমান করে। যা নিয়ে পুরো এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান,তাদের চোখের সামনেই মৌলানা মাহমদুল হাসান সাহেব পিতার নামে আল নজির নূরানী একাডেমী ও তৎসংলগ্ন ১টি হেফজখানা
প্রতিষ্ঠাতা করেন। যা অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় আলো ছড়াচ্ছে । আর এতে একটি মহল হিংসায় ক্ষেপেছে তার উপর। কথায় আছে না,শত্রু বানানোর জন্য ঝগড়া করতে হয় না,ভালো কাজ করলে এমনিতেই শত্রু জন্ম নেবে শতশত।
ঠিক অনুরূপ ঘটনা ঘঠায় তার
ছোট ৪ ভাইসহ কিছু কূচক্রি । যারা তার উন্নতিতে ঈর্ষান্নিত হয়ে তাকে সহ্য করতে পারছিলো না। আর তারা সবাই এক হয় বড়ভাইয়ের বিরুদ্ধে বেঁকে বসেন। শুরু করেন নানা অপবাদ রটানোর কিচ্ছা-কাহিনী।
সরেজমিন গিয়ে আরো জানা যায়,মৌলানা মাহমদুল হাসান একজন বিদগ্ধ আলেম। ওনার পিতার নাম মৌলানা নজির আহমদ। তার পিতা নিজ হাতে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৮৩ সালে। এ মাদরাসার নাম বড়বিল এমদাদিয়া আজিজুল উলুম মাদরাসা। যে টির অবস্থান গর্জনিয়া বড়বিলের গর্জনিয়া খালের পশ্চিমকূলে।
যেখানে পাকা ভবনও রয়েছে। পিতার গড়া এ প্রতিষ্ঠানকে ধরে রাখতে এ পরিবারের সকলের শ্রম-মেধা রয়েছে।
যা এখন চালু আছে।
এরই মধ্যে মৌলানা মাহমদুর হাসানের পরিকল্পনায় ও পরিশ্রমে বড়বিল গ্রামে গর্জনিয়া খালের পূর্বকূলে একটি বেশ বড়
আয়োজনে অপর একটি মাদরাসা প্রতিষ্টার উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়নো করেন তিনি। তবে কোটি টাকার এ ভবন ও স্থাপনায় অপরাপর ভাইয়ের সহযোগীতাও নেন তিনি। বিশেষ করে
ছোটভাই প্রখ্যাত আলেম হারুণ আজিজির সহায়তা ছিলো অনেক বেশী।
মৌলানা মহমদুল হাসান এ প্রতিবেদকসহ সরেজমিন দেখতে যাওয়া সাংবাদিকদের জানান,তিনি ৮ বছর আগে এক
মহাপরিকল্পনা নিয়ে পিতার নামে আল নজির নূরানী একাডেমী তথা নতুন আঙ্গিকে এ মাদরাসার কাজ শুরু করেন। যাতে সবাই সহায়তা করে। এমনকি হারুণ আজিজি দু' হাত খোলে অর্থ সহায়তা দেন
বিদেশ থেকে।
এ সব বিবেচনায় ছোটভাই হারুণ আজিজির এক মেয়েকে তিনি ছেলের বৌ বানিয়ে ঘরে তুলেন সে সময়। যা এখনও আছে,সূখে আছে।
তিনি আরো বলেন,ছোটভাই হারুন আজিজি বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসার পর কিছু কূচক্রি মহল তাকে ভূল বুঝিযে দু'ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ সষ্টি করে দেয়। ফলে তিনি ( হারুন আজিজি) এক পর্যায়ে তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসার মুহতামিম হতে মরিয়া হয়ে কৌশলে পাকাতে থাকে।
তিনি আরো জানান,এ কৌশলে তাকে তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা থেকে দূরে রাখতে চায় পক্ষটি । অনন্যোপায় হয়ে তিনি মুহতামিম পদটি ছেড়ে দিয়ে হারুন আজিজিকে মুহতামিম মেনে নিয়ে এলাকাবাসী ও সচেতন অভিভাবকদের পরামর্শে এ মাদরাসার নির্বাহী পরিচালক পদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার প্রস্তাবে
সম্মতি দিয়ে চুপ থাকেন।
কিন্ত সেই কুচক্রিটি হারুণ আজিজিকে ব্যবহার করে সে পদটিতেও যেতে বাধার সৃষ্টি করে ৷ যা ছিলো অমানবিক।
অভিভাকদের অনেকে জানান,তারা চেনেন মাদরাসা প্রতিষ্ঠাতা মাহমদুল হাসানকে। তার অনুরুধে তারা তাদের সন্তানদের এ মাদরাসায় ভর্তি করান।
এখন উড়ে এসে জুড়ে বসে বড়ভাইকে হেনাস্তা করলে ছাত্ররা সেটিই শিখবে। ভালো কিছু না। এখন তারা এ ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন,কী হয়। তার পর কী করা যায় চিন্ত করবেন তারা।
হারুন আজিজির দাবী,তিনি এ মাদরাসার সব কিছু। তিনি বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়েছেন আর তার বড়ভাই তা দিয়ে মাদরাসা তৈরী করেছেন।
মাহমদুল হাসান বলেন,তিনি এ মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন নিরলস ও কঠোর পরিশ্রমে। হারুন তার ছোটভাই। এখন খুবই বিপাকে তিনি।
তার মতে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়।
তার অভিমত, ভাইয়েরা মিলেমিশে এ দু'প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে চান তিনি।
নচেৎ এ প্রতিস্ঠান দু'টি ধ্বংস হতে বাধ্য।
এলাকাবাসি বলেন,মৌলানা হরুন আজিজি মুহতামিম হলেও মৌলানা মাহমদুল হাসান রাত-দিন কাজ করে তার
ঘামে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাকে নির্বাহী পরিচালকের চাইতে বড় অধিকার দেয়া উচিত।
টাকা দেয়া আর প্রতিষ্ঠান গড়া আকাশ পাতাল তফাত। সুতারাং মৌলানা
আহমদুল হাসানকে প্রতিষ্ঠাতা ও স্থায়ী নির্বাহী পরিচালক করা ছাড়া অন্যকোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে আল্লামা হারুন আজিজি বলেন,
সে অনেক কথা। মৌলানা মাহমদুল হাসান ওনার বড়ভাই ও বিয়াই। তার আচরণে অসন্তুষ্ট তিনি।
তিনি আরো বলেন, মূলত মাদরাসা,হেফজখানা বা মসজিদ সবই তার টাকায় করা হয়েছে। তবু তাদের পারিবারিক অভিভাবক চট্টগ্রাম বাবু নগর মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবু নগরীর পরামর্শে সব করা হচ্ছে বর্তমানে।
ভবিষ্যতেও ওনার পরামর্শে যা করার তাই করবো। এখানে তার ( হারুন আজিজির) করার কিছু নেই। তবে ওনার ইচ্ছা সবাই মিলে পিতার ইচ্ছা করা। মানুষের কল্যাণ করা।