পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা উপজেলার বথি পাড়া এলাকায় জেএসএস সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি চালিয়ে সেনা বাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান কে হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতার পুর্বক দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরীক পরিষদ।
আজ শনিবার বিকাল ৩টায় শহরের হিলবার্ট মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। পরে বঙ্গ বন্ধু মুক্ত মঞ্চের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরীক পরিষদ বান্দরবান জেলা শাখার সহ-সভাপতি আবসর প্রাপ্ত ক্যাপ্টেন তারু মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমান। এতে সংগঠনটির জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তারা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার নির্দেশে তার শসস্ত্র ক্যাডাররা পার্বত্য চট্টগ্রামে অসংখ্য সেনা সেনা ও পুলিশ সদস্য সহ হাজার হাজার সরকারী,বেসরকারী এবং নীরিহ মানুষদের হত্যা করে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত রেখেছে চাঁদাবাজি,খুন গুম ও অপহরনের ঘটনা। সর্ব শেষ গত বুধবার সন্তু লারমার শসস্ত্র ক্যাডার জেএসএস এর শসস্ত্র সদস্যরা বান্দরবানের
রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় সেনা বাহিনীর উপর অর্তকিত গুলি চালালে মাথা গুলি বৃদ্ধ হয়ে সেনা বাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান ঘটনা স্থলে নিহত হয়। এসময় ফিরোজ নামে অপর সেনা সদস্য আহত হয়। বক্তারা অবিলম্ব সন্তু লারমা ও তার শসস্ত্র ক্যাডারদের গ্রেফতার পুর্বক সেনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সহ পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল হত্যা,খুন ও গুমের বিচার দাবী করেন। বক্তারা আরো বলেন, পাবর্ত্যবাসীর জান ও মালের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পরিমান সেনা ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে। সন্তু লারমার শসস্ত্র ক্যাডার বাহিনী দ্বারা অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামকে শান্ত করতে সরকার ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি সম্পাদন করে। সেদিন সন্তু লারমা ও তার ক্যাডারদের হাতে যা অস্ত্র ছিল সকল অস্ত্র সরকারের হাতে জমা দেয়ার শর্ত থাকলেও সন্তু লারমা তার নষ্ট অস্ত্র গুলো জমি দিয়ে অধুনিক ও স্বচল অস্ত্র গুলো তার কাছে রেখে দেয়। শান্তি চুক্তির সুফল ভোগ করে সেই সব আধুনিক অস্ত্র দিয়ে সন্তু লারমার ক্যাডাররা সেনা বাহিনী,পুলিশ সহ নীরিহ মানুষকে হত্যা করছে। এসব অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রতি বছর পাঁচশত কোটি টাকা চাঁদা বাজি করছে। সন্তু লারমা শান্তি চুক্তি লঙ্ঘনের অপরাধে শান্তি চুক্তি বাতিল করে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সন্তু লারমাকে আপসারন করতে হবে। পু্লিশ বাহিনীকে আধুনিকায়ন করে তাদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র দেয়া পার্বত্য বাসীর দাবী। বক্তারা বলেন,সেনা বাহিনী,বিজিবি,পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে পার্বত্য এলাকার সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা আজ পার্বত্য বাসীর প্রানের দাবী। এসময় বক্তারা হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, খুনী সন্তু লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদের পদ থেকে অপসারন না করা হলে তকে আর কখনো বান্দরবানে প্রবেশ করতে দেয়া হবেনা।
উল্লেখ, গত বুধবার বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম বথিপাড়ায় চাঁদাবাজি জন্য এক দল শসস্ত্র সন্ত্রাসী আগমন করবে এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি সেনা টহল দল পাহাড়ি পথ পায়ে হেটে বথি পাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে টহল দলটি উক্ত এলাকায় পৌঁছালে পাড়ার নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সেনা বিহীনিকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করে। জবাবে সেনা টহল দলের সদস্যরাও সন্ত্রীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৩ঘন্টা বন্দুক যুদ্ধ চলে। বন্দুক যুদ্ধের এক পর্যায়ে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস সন্ত্রাসী দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এসময় সেনা বিহীনির গুলির মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাথারি ছোঁড়া গুলিতে মাথায় গুলি বৃদ্ধ হয়ে সেনা বাহিনীর টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং ফিরোজ নামে এক সেনা সদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এসময় তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়।
পরে অভিযানে সেনা টহল দলের সদস্যরা উক্ত এলাকা তল্লাশী চালিয়ে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ১ টি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড তাজা গুলি, ৩ টি এম্যোনিশন ম্যাগাজিন, ৩ টি গাদা বন্দুক, গাদা বন্দুকের ৫ রাউন্ড গুলি, ৪ জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজির নগদ ৫২৯০০ টাকা উদ্ধার করে।