বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কর্তৃক পর্যটন শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিবর্গের মাঝে চাউল বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ আগস্ট)সকাল ১১টায় বান্দরবান সেনা রিজিয়নের সার্বিক দিক নির্দেশনায় ও সদর জোনের তত্ত্বাবধানে সেনা জোনের মাল্টিপারপাস শেডে ভুক্তভোগী সর্বমোট ৪৪৮ জন ব্যক্তিকে প্রত্যেককে ২০ কেজি করে চাউল বিতরন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির মাঝে চাউল বিতরন করেন বান্দরবান সেনা জোনের জোন কমান্ডার লে: কর্নেল এ এস এম মাহমুদুল হাসান, পিএসসি। এসময় রিজিয়ন ও জোন সদরের সেনা অফিসার্স বৃন্দ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রতিনিধি, বান্দরবান পৌরসভার প্রতিনিধি, পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধি বৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রধান অতিথি বলেন,
দীর্ঘদিন থেকে বান্দরবান পার্বত্য জেলায় কেএনএফ নামক আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনের কারণে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় পর্যটক নগরী বান্দরবানে পর্যটকের আনাগোনা একেবারেই সীমিত হয়ে গেছে। সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতা সারাদেশের ন্যায় বান্দরবানেও এর প্রভাব পড়েছে। এছাড়াও বর্তমানে অতিবৃষ্টি ও পার্শ্ববর্তী দেশের অতিরিক্ত পানির চাপে সৃষ্ট বিদ্যমান বন্যায় যাতায়াত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পর্যটন শিল্পেও ব্যাপক ভাবে ক্ষতি সাধিত হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে পর্যটন নির্ভর পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পর্যটন শিল্পে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও সংস্থাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সন্ত্রাসী দমনের পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই ক্রান্তিলগ্নে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা প্রদানের মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বর্তমানে বান্দরবানে পর্যটক সীমিত হওয়ায় চাঁদের গাড়ি, সিএনজি, হোটেল-রিসোর্ট, টুরিস্ট গাইড ও বোট চালক ইত্যাদি পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর সাথে জড়িত শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিগণ সেনা জোনের নিকট ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য সহায়তার আবেদন করলে বিষয়টি গুরত্বের সাথে নিয়ে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন, বান্দরবান জোন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক ও বান্দরবান পৌরসভার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
তিনি আরো বলেন,সম্প্রীতির এই বান্দরবানে কেএনএফ আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন কিছুটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করলেও তা শক্ত হাতে দমনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি পর্যটন নির্ভর এই বান্দরবানের ভুক্তভোগী জনসাধারণের কথা বিবেচনা করে তাদের পাশে থেকে দুঃখকে ভাগাভাগি করে নেওয়াটাও আমাদের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। তারই ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন ও বান্দরবান পৌরসভার যৌথ এই প্রয়াস। এই সহায়তা কার্যক্রমটি আয়োজন করতে পেরে আমরা সকলেই আনন্দিত। বর্তমান পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী তার চেষ্টা সর্বক্ষেত্রে অব্যাহত রেখেছে। আমরা আশা ব্যাক্ত করি খুবই শীঘ্রই পর্যটকগণ সৌন্দর্যের আবার এই বান্দরবানে ভ্রমণের মাধ্যমে এই শিল্পকে আগের ন্যায় ফিরিয়ে আনবে। সেনাবাহিনী সর্বদা মানুষের পাশে ছিল, আছে, থাকবে এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশেও সেনাবাহিনী তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে।