স্বাভাবিক হচ্ছে পাহাড়ের পরিস্থিতি। প্রত্যাহার করা হলো ১৪৪ ধারা। খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে জেল্ াপ্রশাসকের আদেশে ১৪৪ধারা জারি করা হয়েছিলো। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসায় খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। নতুন বাংলাদেশে পাহাড়েও কোনো বৈষম্য থাকবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন উপদেষ্টারা। এদিকে, অবরোধ থাকায় খাগড়াছড়ি ও সাজেকে আটকা পড়েছে প্রায় দু'হাজার পর্যটক। ইউপিডিএফ’র ডাকে শনিবার সকাল থেকে ৭২ঘন্টার সড়ক অবরোধ চলছে তিন জেলায়।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্র করে এক বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যার জেরে অশান্ত হয়ে ওঠে পার্বত্য অঞ্চল। প্রাণ যায় চারজনের। গুলিবিদ্ধসহ আহত হন অনেকে।
পাহাড়ি বাঙালি সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পৌরশহরে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তুলে নেয়া হয় এ বিধিনিষেধ। তবে অবরোধের কারণে বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। এতে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে আটকা পড়েছে প্রায় দুই হাজার পর্যটক।
পার্বত্য অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠার পেছনে ষড়যন্ত্র দেখছেন উপদেষ্টারা। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন তারা। সহিংসতার পর বিভিন্ন গ্রামে পাহারা বসিয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিরা। এতে ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসছে পরিস্থিতি। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি স্থানীয়দের। সম্প্রীতি রক্ষায় সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান সচেতনদের।
এদিকে খাগড়াছড়িতে আলোচিত ফার্নিচার ব্যবসায়ী মামুন হত্যাকান্ডে মামলা হয়েছে। মামলায় ৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত নামা ১০/১২ পাহাড়ি ও বাঙালিকে আসামী করে মামলা হয়েছে। আসামীরা হচ্ছে. মো: শাকিল (২৭), মো: রফিকুল আলম (৫৬) ও মো: দিদারুল আলম। নিহতের স্ত্রী মুক্তা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা মামলা হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে মামলাটি দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বাদী তার এজাহারে অভিযোগ করেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে তার স্বামী ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো: মামুনকে অন্য আসামীদের নির্দেশে মো: শাকিল জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরে সকালে জানতে পারে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ যে, ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে মোটরসাইকেল খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো: মামুনকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জেরে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়ে। দীঘিনালায় অর্ধশতাধিক দোকানপাটে আগুন, স্বণির্ভরে সেনাবাহিনীর উপর গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। সহিংসতার ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়িতে ৩ জন ও রাঙামাটি একজনসহ ৪ জন নিহত হয়।
অপরদিকে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালায় পাহাড়িদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলায় ও নির্বিচার গুলিতে চার জন নিহতের ঘটনা তদন্তের জন্য সরকার ঘোষিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিতে জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার ইউপিডিএফের সহসভাপতি নতুন কুমার চাকমা সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে উক্ত দাবি জানিয়ে বলেন, জাতিসংঘের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি ছাড়া অন্য কোন তদন্ত কমিটি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।