উখিয়ায় মাদকের টাকা না দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মা। ঘটনাটি শুক্রবার রাতে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের মধ্যম হলদিয়া এলাকায় ঘটে। এ ঘটনায় আহত রোকেয়া খানমকে উদ্ধার করে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। অভিযুক্ত রাশেদুল করিম সিকদার কর্তৃক বার বার নির্যাতনের শিকার হওয়া আপন মা কে নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে তার পুরো পরিবার।
জানা যায়, এক বছর পূর্বে রাশেদুল করিম সিকদারের পিতা ফজল করিম সিকদার মারা যায়। কিন্তু তিনি বেঁচে থাকা অবস্থায় রাশেদ নেশার টাকা না পেয়ে তাকে(বাবাকে) মারধরের অভিযোগে তাকে থানায় সোপর্দ করেন বাবা ফজল করিম সিকদার। পরবর্তীতে তৎকালীন উখিয়া থানার ওসি আবুল খায়েরের সাথে তার আপন বড়ভাইয়ের মধ্যস্থতায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান রাশেদ। এরপর থেকে রাশেদ কিছুদিন ভালো থাকলেও পরবর্তীতে আবারো নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এবং তার মা রোকেয়া খানম কাছ থেকে মাদকের টাকা চাইতে থাকে। টাকা না পেলে বেপরোয়া ভাবে মাদকাসক্ত অবস্থায় মায়ের উপর হামলা করতো।
পরে সে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পাওয়ার পর আরও বেশী বেপরোয়া ইয়ে যায় এবং তাকে মাদকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারী ধরনের ছেলে নিয়ে হামলা করে তার মা কে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে অনেকবার মীমাংস করে দেওয়া হলেও পরবর্তীতে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠে রাশেদ।
স্থানীয়রা জানান,” রাশেদের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে বার বার তার মা কে আক্রমণ করে। মারধর সহ মাদকের টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার বিষয়টি সমাধান করে দেওয়া হলেও রাশেদের এমন অমানবিক নির্যাতন তাদের ভাবিয়ে তুলছে বলে জানা গেছে। পরিবারের এমন অবাধ্য ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান স্থানীয়র সচেতন মহল।
সর্বশেষ, শুক্রবার(২৭ অক্টোবর) রাতে নিজের ছেলের হাতে হামলার শিকার হওয়া রোকেয়া খানম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,” আমার ছেলে হয়েও রাশেদ বার বার মাদকাসক্ত হয়ে মারধর করে। নানা সময় আমার থেকে টাকা চাইতো। যেদিন টাকা দিতে পারবোনা সেদিন শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে ছুরিকাঘাত ও মারধর করে জখম সহ আমার মাথার চুল উঠিয়ে নেয় রাশেদের নেতৃত্ব কয়েকজন অজ্ঞাত লোক। আমি আমার অবাধ্য ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু মুঠোফোনে জানান,” মা কে মারধরের অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা বলেন, মায়ের উপর হামলাকারীর সাথে কোনো আপোষ নেই। মায়ের অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, রাসেদ সিকদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে যদি সে অপরাধ করে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
এদিকে, বার বার ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল।