আজ সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ঈদের ছুটিতেও পর্যটকশূন্য বান্দরবান

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১২:২০:০০ অপরাহ্ন | পার্বত্য চট্টগ্রাম

বান্দরবানে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর অপতৎপরতায় বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে দর্শনীয় স্থানগুলো পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে টানা ৫ দিনের সরকারি ছুটিতেও শহরের নিকটবর্তী পর্যটন স্পটগুলোতে উল্লেখযোগ্য পর্যটক লক্ষ্য করা যায়নি।

২০২২ সালের মে মাসের আগেও বেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর ছিল পার্বত্য জেলা বান্দরবান। জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে বিশেষ ছুটির দিনে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়ে যেত কয়েকগুণ। তবে এবার পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের কারণে চলমান পরিস্থিতিতে পর্যটকরা বান্দরবান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্পট নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, নীলাচল, মেঘলা, প্রান্তিক লেক, আলীকদম উপজেলার অন্যতম দাম তোয়া ঝরনাসহ দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পটগুলোতে এখন আগের মতো পর্যটকের দেখা মেলে না। কারণ ২০২২ সালের মে মাস থেকে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার দুর্গম এলাকায় তাদের তৎপরতা শুরু করে। তারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের বম, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি, খেয়াং ও মুরুং জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে সশস্ত্র আন্দোলন করছে বলে দাবি করে আসছে। 

dhakapost

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার তিন উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকায় ঈদের ছুটির দিনগুলোতেও আশানুরূপ পর্যটক আসেননি। এবারে অন্যান্য বছরের তুলনায় ১০ শতাংশেরও কম কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে।

 

বান্দরবানের হোটেল নাইট হ্যা‌ভেনের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, তিন উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কারণে বান্দরবান ভ্রমণে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আমরা হোটেলের রুম ভাড়ায় ছাড় দিয়েও বুকিং পাচ্ছি না।

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল আরণ্যের মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এই ঈদে পর্যটকদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ঈদে টানা ৫ দিন সরকারি বন্ধ থাকলেও ১০ শতাংশ বুকিং পাওয়া যায়নি। জেলা শহরের ৭০টি আবাসিক হোটেল-মোটেল ও কটেজ এখন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে তিন উপজেলায় দফায় দফায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকায় পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে।

এ বিষয়ে বান্দরবা‌নের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পর্যটক একটু বেশি হয়। সামনে এসএসসি পরীক্ষা, তাপ প্রবাহসহ নানা কারণে আগের থেকে তুলনামূলকভাবে পর্যটন একটু কম। পরিস্থিতি একটু উন্নতি হলে রোয়াংছ‌ড়ি, রুমা ও থানচি এই তিন উপজেলায় পর্যটক ভ্রম‌ণে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হবে। তবে পর্যটকরা বান্দরবান সদরসহ বাকি অন্য উপজেলাগুলোর পর্যটনকেন্দ্রে অনায়াসে ঘুরতে পারেন।