আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মাদরাসা শিক্ষার বিপক্ষ শক্তিরাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২৭ জুন ২০২২ ০৭:০৮:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বিধিমতে আমাকে মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে অবৈধ বলার কোন সুযোগ নাই। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের বিপক্ষের শক্তিরাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের অভিযোগের আইনি কোন ভিত্তি নাই। 

সোমবার (২৭ জুন) বিকেলে কক্সবাজারের একটি কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসব কথা বলেছেন উখিয়ার রাজাপালং এমদাদুল উলুম ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির নব-মনোনীত সভাপতি এ.কে.এম আবুল হাসান আলী। 

তিনি বলেন, বিভিন্ন জনের কুমন্ত্রণায় সরকারের যুগোপযোগী শিক্ষাকে ব্যাঘাত করার অপচেষ্টা করছে একটি চক্র। তাতে কিছু শিক্ষক সরাসরি জড়িত। বাইরের দুষ্টচক্রের ইন্দন রয়েছে। তারা আমাকে জামায়াতের নেতা বানিয়ে অপপ্রচার করছে। 

আমার প্রশ্ন, ওরা কারা? বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা কেন, কোন উদ্দেশ্যে করছে? মাদরাসার সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ কারা নস্যাৎ করতে চায়? তাদের পরিচয় আপনাদের নিকট স্পষ্ট। 

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারের ডিও লেটার এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির একান্ত প্রচেষ্টায় উখিয়া উপজেলার একমাত্র ডিগ্রী সমপর্যায়ের প্রতিষ্ঠান রাজাপালং এমদাদুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসার গভর্নিং বডির নব-মনোনিত সভাপতি এ.কে.এম আবুল হাসান আলীকে নিয়ে মিথ্যাচার ও অসত্য সংবাদ পরিবেশনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়। 

এতে এ.কে.এম আবুল হাসান আলী ছাড়াও ইংরেজি প্রভাষক মুহাম্মদ রশিদ, সহকারী শিক্ষক (গনিত) জুনাইদ মোস্তফা, আরবী প্রভাষক আবু বরদা মুহাম্মদ নোমান, শিক্ষক মনাজের আহসানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে এ.কে.এম আবুল হাসান আলী বলেন, আমাকে মাদরাসার সভাপতি মনোনয়ন দিয়েছেন ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আহসান সাঈদ। আর তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আবদুল হামিদ।

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের ওলামা মাশায়েখগণ দীর্ঘ ১০০ বৎসর আন্দোলন করেছেন। অবশেষে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভাইসচ্যান্সেলর হলেন অধ্যাপক আহসান সাঈদ। যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। আমার নিয়োগ তথা মনোনয়ন অবৈধ নয়। তাদের দাবী ভিত্তিহীন ও অসত্য। কারন, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডি/এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়ন দেওয়ার একমাত্র ক্ষমতা ভিসির। প্রতিষ্ঠান প্রধান তথা অধ্যক্ষ কিংবা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ যে বা যাদের নাম প্রস্তাব করেন তাকে কিংবা তাদের মধ্য থেকে মনোনয়ন দিতে ভিসি  বাধ্য নহেন। তিনি প্রস্তাবের বাইরেও যোগ্যতা সম্পন্ন যে কাউকে সভাপতির মনোনয়ন দিতে পারেন। সে হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

আমাকে কমিটির অপরাপর সদস্যরা অনাস্থা জানিয়েছেন বলে যে অপপ্রচার করা হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ তারা এখনও দায়িত্ব প্রাপ্ত নন। ভাল মন্দ মতামত প্রদানের জন্য ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। এ মুহূর্তে আমি ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনিত শিক্ষানুরাগী সদস্য ছাড়া আর কেউ অনুমোদিত নয়। আর আমিও সভাপতির একক ক্ষমতা ছাড়া অন্য কোন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারব না। যেমন- শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন বিলে প্রতিস্বাক্ষর করা, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চিঠিপত্র অগ্রায়ন করা এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পুনঃ বন্টন করা ইত্যাদি।

সভাপতি এ.কে.এম আবুল হাসান আলী দুঃখ করে বলেন, আমি নাকি মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা আটকিয়ে দিয়েছি। তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও কাল্পনিক। বরং শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা আটকিয়ে রেখেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: আবদুল হক। 

বেতন ভাতা ছাড় করতে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বিল সভাপতি বরাবর উপস্থাপন করবেন অধ্যক্ষ কিংবা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এটি নিয়ম। আর সভাপতি শুধুমাত্র প্রতিস্বাক্ষর করবেন। তাই বেতন আটকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমি দায়ী নই। বরং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষই দায়ী।

সাংবাদিকদের বিচার দিয়ে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ৩২ বছর মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষকের অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বাধা দিয়েছি।  সহকারী অধ্যাপক দাবি করেন মহিবুল্লাহ। অথচ তিনি তিনি প্রভাষক। একই সাথে কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে চান। তাতে আমি বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল হকের কিছু বিধি বহির্ভূত ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। তিনিও আমার প্রতি ক্ষিপ্ত। এই দুইজনই মাদরাসায় অচলাবস্থা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এই শৃঙ্খলা বিরোধী ও পেশাগত অসধাচারণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।