আজ শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ই ফাল্গুন ১৪৩১

বাংলার মানুষ প্রতিবেশী দেশের কোনো অন্যায্যতা দেখতে চায় না: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ০৫:৩৮:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশের জনগণকে মনে রাখেনি, শুধু স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে এমন মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ মনে করে প্রতিবেশী দেশের (ভারত) সঙ্গে আমাদের যে অন্যায্য চুক্তি আছে, সেগুলো বাতিল করতে হবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের কথা বিবেচনা করতে হবে।

 

বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবেশী দেশ থেকে আরও অন্যায্যতা দেখতে চায় না, ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ আর দেখতে চায় না।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর পাড়ে পাঁচটি জেলার ১১টি পয়েন্টে তিস্তা পানির ন্যায্য হিসসা ও মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আগস্টে খুনি স্বৈরাচারী দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এ স্বৈরাচার একদিন একটি কথা বলেছিল ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা (ভারত) সারা জীবন মনে রাখবে। তাই এ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত শুধু স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে বাংলার মানুষকে মনে রাখেনি। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে কিছু দেয় নাই শুধু দিয়েছে স্বৈরাচারকে। প্রতিটি দেশেরই তাদের প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বা ঝামেলা থাকে। কিন্তু সেগুলোকে কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা হয়। যেটা আমাদের এখানে এতদিন হয়নি।  

 

তারেক রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশ যদি আমাদের তিস্তার ন্যায্যতা না দেয় তাহলে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না। আমাদেরটা আমাদেরই চিন্তা করতে হবে। দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।

 

তিনি বলেন, তিস্তার ন্যায্য পানি আদায়ের জন্য আজকে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। এ পানি বণ্টন নিয়ে আমাদের প্রতিবেশী দেশ অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করছে। ৫০ বছর ধরে ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পাই নাই। এখন আবার এসেছে তিস্তার অভিশাপ।

 

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের অপ্রতিবেশীমূলক আচরণের কারণে আজকে তিস্তা পাড়ের লাখ মানুষ বন্যায় এবং খরায় জীবন যাপন করছে। এর ফলে লাখ লাখ টাকার শর্ষের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

 

 বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসবে তখন এ তিস্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখবে উল্লেখ তারেক রহমান বলেন, পাশাপাশি দেশের অন্যান্য যেসব নদী আছে সেগুলোকে আমাদের পুনরায় সংস্কার এবং খনন করতে হবে। শহীদ জিয়ার সেই খাল খনন কর্মসূচি আমাদের পুনরায় হাতে নিতে হবে।

 

স্বৈরাচার সরকার গত ১৫টি বছর নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করেছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের মানুষের সম্ভাবনা এবং সুযোগ তৈরি হয়েছে। সরকারের কোনো হটকারী সিদ্ধান্তে বা আমাদের অসতর্কতায় যেন খুনি ফ্যাসিস্ট সরকারের কেউ পুনর্বাসন হওয়ার সুযোগ না পায়, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

 

দুইদিন ধরে তিস্তা পাড়ে মানুষ যে আন্দোলন করছে এটা বৃথা যাবে না জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, তিস্তাকে রক্ষা করতে হলে তিস্তাবাসীকে একটি দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর সেটি হচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনাদের পছন্দের দলে ভোট দিতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখেছে মানুষের ঐক্যবদ্ধতা। কীভাবে তারা একটি সংকটে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করেছে। আপনারা যেভাবে বলেছেন ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও’। একইভাবে আমাদের দেশের সবাইকে বলতে হবে ‘জাগো বাহে বাংলাদেশ বাঁচাও’।