আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
২৫ আগস্টের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ

পিএমখালীতে পাহাড় কাটার ঘটনায় আদালতের উষ্মা প্রকাশ

ইমাম খাইর, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ১১ অগাস্ট ২০২২ ০৭:০১:০০ অপরাহ্ন | কক্সবাজার প্রতিদিন

কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ছনখোলা এলাকায় সংরক্ষিত বনভূমি উজাড় করে পাহাড় কাটার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন আদালত। 

সেই সঙ্গে কারা পাহাড় কাটছে তাদের নাম ঠিকানা, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র প্রস্তুত, পাহাড়ের কি পরিমাণ মাটি কাটা হয়েছে, তার বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে জমা দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার পরিবেশ আদালতের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) মিস মামলা নং ০১/২০২২ (কক্সবাজার) মূলে এই আদেশ জারি করেছেন বিচারক।

আদেশে বলা হয়েছে, গত ৮ আগস্ট কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে সংরক্ষিত বনভূমির পাহাড় কাটা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশ হয়। 

 ওই প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করে আমলী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, কতিপয় পরিবেশ দস্যু দ্বারা নির্বিচারে সরকারী পাহাড় কেটে মাটি বিক্রয় করে একটি অসাধুচক্র পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। পাহাড় অমূল্য সম্পদ। প্রাকৃতিক পাহাড়ে প্রচুর ফলজ, বনজ গাছ, তরুলতা প্রকৃতির অকৃপণ আর্শিবাদে বেড়ে উঠে। এসব পাহাড় বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখির অবাধ বিচরণ ও নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এসব পাহাড় নানাভাবে পরিবেশকে রক্ষা করে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

বিচারক বিশ্লেষণে বলেন, কক্সবাজার প্রতিবেশগতভাবে একটি সংকটাপন্ন এলাকা। এখানে পরিবেশের যেকোন বিপর্যয় স্থানীয় অধিবাসীদের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে যেকোনভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা একান্ত অপরিহার্য। 

এবিষয়ে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং-৫৯৫৯/২০১১ মামলায় কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। অবৈধভাবে সরকারি পাহাড়ের মাটি খননের মাধ্যমে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে, যা ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী একটি শান্তিযোগ্য অপরাধ মর্মে আমলী আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়।

কিন্তু উপযুক্ত অপরাধসমূহ সুনির্দিষ্টভাবে কার দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে তাদের বিস্তারিত নাম, ঠিকানা উক্ত পত্রিকার প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট নয়। অপরাধটি কাদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে তা প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিরুপন করা প্রয়োজন। আসামিদের সনাক্ত করাসহ সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র প্রস্তুত, পাহাড়ের কি পরিমাণ মাটি কাটা হয়েছে, তা নিরুপন করা প্রয়োজন।   

এমতবস্থায়, বর্ণিত বিষয়ে যাচাইপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতঃ আদালতকে অবগত করতে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ-পরিচালককে নির্দেশ প্রদান করেছেন বিচারক। আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।