হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড উদালিয়া গ্রামে রাতের আঁধারে আবারো মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ৫ একর জায়গাজুড়ে লাগানো প্রায় ছয় শতাধিক আম্রপালি ও আপেল কুল বরই ও কলা গাছের ৭ মাস ও ১ বছর বয়সী গাছ কেটে সাবাড় করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (০৬ জুলাই) দুপুর ২ টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারটি এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এর আগে শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় অথবা ভোর রাতের দিকে দুর্বৃত্তরা এ ঘটনাটি ঘটায় বলে জানান তারা। এর আগেও দুইবার ওই বাগানের প্রায় সব গাছ কেটে নস্ট করেছিলো তারা।
সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সেকান্দর মিয়ার সন্তান হাবিব, সাইফুল ইসলাম ও সংবাদকর্মী মহিন উদ্দীন উক্ত স্থানে বিভিন্ন ফল গাছের বাগান করেন। বাগান তৈরী করা, চারা রোপণ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত ঋণ করা ৮/৮ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়।
কিন্তু আজ শনিবার সকালে প্রতিদিনের মতো বাগানে গিয়ে দেখা যায় শুক্রবার দিবাগত রাতে অথবা ভোর রাতের দিকে কে বা কারা বাগানের প্রায় চার শতের অধিক আম্রপালি, আপেল কুল বরই এবং বিভিন্ন জাতের কলা গাছ কেটে তছনছ করে ফেলেছে। এতে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রায় দশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সন্তান হাবিবুর রহমান বেলা দুপুর দুইটার দিকে জানান, আমাদের সাথে কারো শত্রুতা নেই। প্রতিদিন আমি সকালে এবং বিকেলে দুইবার বাগানে এসে দেখে যায়। গতকাল বিকেলেও এসে দেখে গিয়েছিলাম।
কিন্তু প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার সকালে বাগানে এসে দেখি এই বাগানের সব আম, বরই ও কলা গাছ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। গত ২০২৩ সালের ০২ জুন শুক্রবার এবং চলতি বছরের ০৮ ই জানুয়ারী সোমবার আমাদের বাগানের প্রায় ৬ শতাধিক কলা গাছের চারা কে বা কারা কেটে ফেলেছিলো। উভয় ঘটনায় আমি বাদী হয়ে মো.মানিক প্রকাশ শেয়ান মানিক কে এবং অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে বিবাদী করে সংশ্লিষ্ট মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। যার তদন্ত ভার ছিলো মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ফয়সাল এর নিকট। ৮ই জানুয়ারীর অভিযোগের পর বিবাদী মানিক আমাদের অজান্তে দেশ ত্যাগ করেছিলো। এর পরে ৭ মাসের মাথায় আবারো আমাদের সেই ফলজ গাছের বাগান রাতের আধারে কে বা কারা কেটে সাবাড় করে দিলো। এবার কে এই সর্বনাশ করল বুঝতে পারছি না। এই বাগান করতে গিয়ে আমরা বার বার ঋণগ্রস্ত হয়েছি। কীভাবে এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠব বুঝতে পারছি না। প্রতি ৭ মাসের মাথায় পর পর এবার সহ তিনবার দুর্বৃত্তরা আমাদের বাগান কাটলো। আমরা এ ঘটনায় আবারো উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও হাটহাজারী মডেল থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ফয়সাল জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। আমি ক্ষতিগ্রস্তদের মডেল থানায় নতুন করে একটা অভিযোগ দিতে পরামর্শ দিয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি।
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল আলম শনিবার বিকালের দিকে জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান জানান, এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।