দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ১৯৪২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান রাশিয়ার ভলগোগ্রাদে জার্মান নাৎসি বাহিনীকে পরাজিত করে তৎকালীন সোভিয়েত বাহিনী। ওই জয়ের ৮০ বছর উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক ভাষণ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই ভাষণে ইউক্রেনে ‘গতানুগতিক অস্ত্রের’ বাইরে ‘অন্য অস্ত্র’ ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধকে নব্য নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবেও অভিহিত করেছেন তিনি। এছাড়া ইউক্রেনকে জার্মানি লিওপার্ড-২ ট্যাংক দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, সেটিরও তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি।
পুতিন বলেছেন, ‘এটি অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি। আমরা আবারও জার্মানির লিওপার্ড-২ ট্যাংক দ্বারা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাশিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে হারানোর যে স্বপ্ন পশ্চিমারা দেখছে সেটি কখনো সফল হবে না।
এ ব্যাপারে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘যারা আশা করছে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে হারাবে— মনে হচ্ছে, তারা বোঝেনা, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আধুনিক যুদ্ধ অনেক কঠিন হবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা তাদের সীমান্তে আমাদের ট্যাংক পাঠাচ্ছি না, কিন্তু এর জবাব দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে। জবাব দেওয়ার সময় বিষয়টি শুধু (গতানুগতিক) সামরিক অস্ত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সবাইকে এটি বুঝতে হবে।’
তবে পুতিন গতানুগতিক অস্ত্র— ট্যাংক, কামান ও গোলা ছাড়া কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন সেটি স্পষ্ট নয়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রো পেসকোভের কাছে ‘পুতিনের ইঙ্গিতের’ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনিও সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। এর বদলে বলেছেন, ‘পশ্চিমারা ইউক্রেনকে নতুন সামরিক অস্ত্র সরবরাহ করছে। রাশিয়া সর্বোচ্চটা ব্যবহার করে এর জবাব দেবে।’
বর্তমানে রাশিয়ার এই অঞ্চলটি ভলগোগ্রাদে নামে পরিচিতি হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটির নাম ছিল স্টালিনগার্ড। ওই সময় জার্মান নাৎসিদের বিরুদ্ধে পাওয়া জয়কে ‘স্টালিনগার্ড যুদ্ধের জয়’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল। ওই যুদ্ধে নাৎসি বাহিনীর ৯১ হাজার সেনাকে আটক করেছিল সোভিয়েত সেনারা। যা যুদ্ধের মোড়ই ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরই একে নব্য নাৎসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করে আসছেন পুতিন। তিনি নতুন করে আবারও একই কথা বলেছেন।
‘দুর্ভাগ্যবশত, আমরা ইতোমধ্যে আধুনিকতার আড়ালে নব্য নাৎসি মতবাদ দেখতে পাচ্ছি। নাৎসিবাদের নতুন আত্মপ্রকাশ আবারও আমাদের দেশের নিরাপত্তাকে সরাসরি হুমকিতে ফেলছে। আমাদের বার বার পশ্চিমাদের সামগ্রিক আগ্রাসন রুখতে হচ্ছে, বলেন পুতিন।’