চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে স্বামী-স্ত্রীসহ চোর চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, স্ত্রী কাজের বুয়া সেজে বাসাবাড়ির তথ্য দিত আর স্বামী সঙ্গীদের নিয়ে চুরি করত ঘরের মূল্যবান সামগ্রী।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) চোরদেরকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর চরজব্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বায়েজীদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তিনি বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর বায়েজীদ বোস্তামী থানার আতুরার ডিপো এলাকায় এক প্রবাসীর বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই চক্রটি কমপক্ষে ৫০ বার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে চুরি করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- মো. সাইফুল ইসলাম (২২), সাইফুদ্দিন (৩২), তার স্ত্রী রুমা আকতার (৩৮) ও মো. আলম (২৪)।
পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলন, আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বায়েজীদ থানা এলাকাসহ আশপাশ এলাকার সে সকল বাড়ির লোকজন বেড়াতে বা অন্য কোনো কাজে অন্যত্র অবস্থান করে, সেই বাসা বা ঘরকে টার্গেট করে চুরি করে থাকে। আর এর জন্য সাইফুদ্দিনের স্ত্রী রুমা দিনে কাজের বুয়া সেজে বাসা শনাক্ত করে এবং তথ্য তার স্বামীসহ অন্যান্যদেরকে সরবরাহ করে। পরে চোরচক্র রাতের বেলায় কৌশলে বাসায় প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, রুমা আক্তার চোরাই সোনা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র বিভিন্ন বাসা ও দোকানে বিক্রি করে থাকে। সে চুরি করা জিনিসপত্র আত্মীয়-স্বজন বিদেশ থেকে পাঠিয়েছে বলে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে বিক্রি করে থাকে। চুরি করার পরপরই তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বায়েজীদ বোস্তামী থানার আতুরার ডিপো এলাকায় এক প্রবাসী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাকলিয়া এলাকায় খালার বাড়িতে বেড়াতে যান। পরে ৩০ ডিসেম্বর বাসায় ফিরে দেখে তার ঘরের দরজা খোলা ও ঘরে থাকা সোনার অলঙ্কার, সৌদি রিয়েলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নাই। পরে এই ঘটনায় ১ জানুয়ারি বায়েজীদ বোস্তামী থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলা দায়েরের পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ১০ জানুয়ারি সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। ১৩ জানুয়ারি ঘটনার সাথে জড়িত চোর চক্রের অন্যতম সদস্য সাইফুদ্দিন ও তার স্ত্রী রুমা আকতারকে নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রিমান্ডে থাকা সাইফুলসহ তিনজনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেখানে তারা চুরির কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যদের ভিত্তিতে প্রথমে মো. সাইফুল ইসলামের বাসা থেকে বাদীর চুরি যাওয়া গহনা ও রিয়াল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া তদন্তে নাম আসা আসামি মো. আলমকে চুরির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসহ গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ সাইফুদ্দিন দম্পতির বাসা থেকে চুরি যাওয়া আরও সোনার গহনা উদ্ধার করা হয়। এ সময় সর্বমোট ১৩ ভরি সোনার গহনা ও ২ হাজার রিয়াল জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, আসামি সাইফুলের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি ও বায়েজীদ বোস্তামী থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে।