একাধিক ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলার মূলহোতা মোক্তার গ্রেপ্তার সাতকানিয়ায় এক যুবতীকে গণধর্ষণের ঘটনার মূল হোতা ও একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি মো. মোক্তার আহমদ(৪৫) নামে এক ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার ৭ নভেম্বর রাতে উপজেলার কেরানিহাট এলাকায় পুলিশ ও র্যার-৭ যৌথ অভিযানে চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি উপজেলার এওচিয়ার ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড চূড়ামনি সিকদার পাড়ার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। এ ব্যাপারে ধর্ষণ মামলার বাদী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত ৭ বছর আগে বাঁশখালীর সরল ইউনিয়ন থেকে পরিবার নিয়ে আর্থিক অনটনের কারনে ভিটে-বাড়ি বিক্রি করে তিনি মা-বাবা ২ বোন নিয়ে সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া এলাকায় জনৈক সেলিমের জায়গা খাজনাতে ছোট্ট ঘর নির্মান করে বসবাস করে আসছিলেন। ধর্ষিতা জমিদার সেলিমের মেয়ের ঢাকার বাসায় ঝি’য়ের কাজ করত। গত জুলাই মাসে সে ঢাকা থেকে নিজ এওচিয়ায় আসে। বাড়িতে আসার পর থেকে পার্শ্ববর্তী লম্পট মোক্তার আহমদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার উপর। এরপর থেকে মোক্তার তাকে বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব দিতে থাকে। এতে রাজি না হলে বিগত ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার সময় পাশ্ববর্তী আনু বেগম কে দিয়ে ফুসলিয়ে ধর্ষিতার বাড়ির সামনের রাস্তা উপর নিয়ে যায়। সেখান থেকে জোর করে সিএনজি অটোরিক্সাযেগে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়। লম্পট মোক্তার সেখানে তাকে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। একই দিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পুনরায় এলাকায় নিয়ে এসে ধর্ষিতাকে জোরপূর্বক মদ পান করিয়ে ছাবেরের পেঁপে বাগান ও বক্করের টিলায় নিয়ে মোক্তারের আরেক সহযোগী শিমুল প্রকাশ শ্যামলসহ আরও ৪/৫ জন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে মোক্তার ও শিমুলসহ তাদের অপর সঙ্গীরা ট্যাক্সি যোগে পরদিন ২৮ অক্টোবর ভোর আনুমানিক ৬ টার দিকে বাঁশখালীর কাতারিয়া এলাকায় ধর্ষিতার এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। একই দিন সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ধর্ষিতা যুবতী বাড়িতে ফেরত আসে। পরে ধর্ষিতার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে স্থানীয় ইউ.পি সদস্য মোজাফফর ও আজিজকে জানালেও তারা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ২৯ অক্টোবর থানায় মামলা দিলেও তা নথিভুক্ত হয়নি। ধর্ষিতা যুবতী অসুস্থ হয়ে পড়লে চমেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করানো হয়।এ ঘটনায় ধর্ষিতা যুবতীর বড় ভাই বাদী হয়ে ২ নভেম্বর রাতে মোক্তারসহ উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের জোট পুকুরিয়া বাজারের উত্তর পাশে দক্ষিণ কাঞ্চনা এলাকার শিমুল প্রকাশ শ্যামল (৪০)ও এওচিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড চূড়ামণি সিকদার পাড়ার আনু বেগম (৪০) কে আসামী করে থানায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে জোর পূর্বক দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ ও সহায়তা করার অপরাধে মামলা দায়ের করেন। সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসি তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মোক্তারকে কেরানীহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। সে ওই মামলাগুলোতে প্রায় ৮ বছর জেল খেটে সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত মোক্তার ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে। জবানবন্দি গ্রহনের জন্য তাকে আজ মঙ্গলবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।