সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতির প্রয়োগ করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, অবাধ নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ এখনও রয়েছে। ভোট সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনার তাগিদও দিয়েছেন তারা।
গত ২৪ মে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক কার্যক্রম ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধাদানকারীদের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা হবে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এর প্রয়োগ শুরু হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার ও বিরোধী দল, সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যদের ওপর এটি কার্যকর করা হয়েছে। এতে তাদের পরিবারের সদস্যরাও থাকতে পারেন।
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবিরের মতে, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।
তিনি বলেন, ২৪ মে’র পর সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে কতটা ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা, সেটা দেখার বিষয়। আর যদি না নিয়ে থাকি, তাহলে সেক্ষেত্রে কি কি ব্যত্যয় ঘটেছে তা দেখতে হবে। বিবৃতিতে আপাতত সেটারই মূল্যায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এই সিদ্ধান্ত এসেছে।
সাবেক কূটনীতিক বলেন, আমার ধারণা-আমাদের একটা সুযোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২৪ মে’র পরই সুযোগটা দিয়েছিল তারা। মার্কিনিরা যেভাবে চেয়েছিল, সেভাবে হলে হয়তো ভিসানীতি বাস্তবায়নে যেতো না।
হুমায়ুন কবির বলেন, ভিসানীতি প্রয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের একটা সংকেত দিয়েছে। বোঝাতে চেয়েছে, তাদের কথা না শুনলে অ্যাকশনে যাবে তারা। এই অবস্থায় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে বিপাকে পড়তে হতে পারে। এ নিয়ে এখনই সজাগ ও সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে দেশের রাজনীতি অতীত চরিত্র থেকে বেরিয়ে এখন অনেকটাই সহিংসতামুক্ত। মার্কিন ভিসানীতির কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান।
তিনি বলেন, আমি মনে করি-গত ৪ মাসে দেশে যথেষ্ট গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উন্নতি হয়েছে। সহিংসতা নেই বললেই চলে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। সরকারের মনোভাবও বদল হয়েছে। সবাই অনুভব করছে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার।
তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গুণগত উন্নতি হয়েছে। এটাকে আরও শক্ত করতে হবে। এজন্য সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা দরকার।
দুই বিশ্লেষকই বলছেন, মার্কিন এই ভিসানীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।