মুক্তিযুদ্ধ বার বার আসে না, মুক্তিযোদ্ধরাও আবার নতুন করে জন্ম নেবে না। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা এখনো বেঁচে আছেন তাদের সম্মান জানাতে হবে। তাদের সম্মান জানানোর মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উজ্জীবিত থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে গেলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে- একথা স্মরণ রেখেই নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে আগ্রাবাদের সিজিও বিল্ডিংয়ে কর আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ হাশেম, সাবেক সভাপতি রতন কুমার রায়, অ্যাডভোকেট এনায়েত উল্লাহ, মো. আজিজ উদ্দিন (হায়দার), এসএ আবুল বাশার তালুকদার, মো. আখতার উদ্দিন, আসহাব উদ্দিন, এসএ হাই ভূইয়া প্রমুখ।
মেয়র বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ২১ বছর স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে পাকিস্তানি ভাবধারা প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নাম চিরতরে মুছে দিতে এমন কোনো অপচেষ্টা বাদ দেয়নি তারা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছতে পারেনি। তারা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধু কাগজে লেখা একটি নাম নয়, বঙ্গবন্ধু বাঙালির অন্তরে ধারণ করা একটি নাম ও ইতিহাস। ইতিহাসের সন্তানেরা কোনো দিন মরে না, তারা মৃত্যুহীন।
বিশেষ অতিথি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এখনো যারা বিতর্ক করেন তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করেন উল্লেখ করে বলেন, তারা বুঝে না ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক সাতই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ভাষণ দিয়েছেন তাতেই চূড়ান্ত ঘোষণা হয়ে গেছে। এরপর চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান বঙ্গবন্ধু কর্তৃক পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। সুতরাং ঘোষণা নিয়ে কোনো বিতর্ক করার অবকাশ নেই।
অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা সব সময় জাতীয় বীর। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে অসহায় চিহ্নিত করে রিকশা, ভ্যানগাড়ি ইত্যাদি উপহার দেওয়া মানে তাদের অবজ্ঞা করার শামিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেছেন। মৃত্যুর পর লাল সবুজের পতাকা দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়ার চেয়ে আর বড় সম্মান কিছুই নেই।
অনুষ্ঠানে ৬ জন কর আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।