আজ শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
মিরসরাইয়ের নিম্নাঞ্চলের পানি এখনো নামেনি

পানিতে ডুবে আছে গ্রামীণ সড়ক, কৃষি জমি, পুকুর, পোল্ট্রি খামার

নিজস্ব প্রতিবেদক, মিরসরাই : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৭ অগাস্ট ২০২৪ ০৯:১১:০০ অপরাহ্ন | উত্তর চট্টগ্রাম

টানা সাত দিন চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের পানি এখনো পুরোপুরি নামেনি। বন্যায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভার অন্তত দুই লাখ মানুষ কার্যত পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলো। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অসংখ্য কাঁচা ও মাটির ঘর। গত দুইদিন ধরে অধিকাংশ ঘর থেকে পানি নামলেও উঠানে ও গ্রামীণ সড়কের পানি থাকায় স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরতে পারছে না এখানকার মানুষ।

জানা গেছে, গত বুধবার (২১ আগস্ট) থেকে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রায় ১৬৫টি গ্রাম বন্যার পানি প্লাবিত হয়। প্রথমদিকে উপজেলার ১৮২টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নেয়। এরপর গত সোমবার থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করে লোকজন। তবে এখনো প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এবং আরো প্রায় ২০ হাজার মানুষ আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট ) বেলা ৩টার দিকে উপজেলার আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, এখানে বর্তমানে নারী-বৃদ্ধ ও শিশু মিলে ৭০জন রয়েছেন। তবে গত কয়েকদিন পূর্বে এখানে প্রায় ১ হাজার লোক আশ্রয় নেয়। ওইদিন উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার ও অলিনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে বাড়ি-ঘর থেকে বানের পানি নেমে গেছে। এখানকার মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য লড়াই করছেন। তবে পশ্চিম জোয়ার গ্রামের অধিকাংশ কাঁচা ও মাটির ঘর মাটিতে মিশে গেছে। এখানে ভেসে গেছে শত শত গবাদিপশু। 

গ্রামের বাসিন্দা জহির উদ্দিন জানান, বন্যার শুরুতেই তলিয়ে যায় করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রাম। এ গ্রাম ফেনী নদীর পাশে হওয়ার দরুন পানি তীব্রতাও বেশি ছিলো। এখানে দরিদ্র পরিবারগুলোর সহায় সম্বল বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। 

মঙ্গলবার পর্যন্ত ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, ধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এখনো প্রায় ৩ফুট পানি রয়েছে। এসব ইউনিয়নে গ্রামীণ সড়ক, পুকুর, পোল্ট্রি খামার, কৃষি জমি এখনো পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে উপজেলার ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, ধুম ইউনিয়নের কিছু গ্রামে এখনো বন্যার পানি রয়েছে। তবে বাড়ি ঘর থেকে পানি নেমে গেছে। গ্রামীণ কিছু সড়কে এখনো পানি আছে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক মাহফুজা জেরিন জানান, বন্যা পরিস্থিতি আগামী দু’একদিনের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশা করছি। এখন আমরা জনস্বাস্থ্য এবং পুনর্বাসন নিয়ে পরিকল্পনা করছি। বন্যাকবলিত মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আমরা ব্যাপক কাজ করছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সহায়তা নিয়ে গ্রামে গ্রামে মেডিক্যাল টিম গঠন করে শিশু-নারী ও বৃদ্ধদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।